দলীয় কার্যালয় থেকে বিজেপি কর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার

দলীয় কার্যালয় থেকে বিজেপি কর্মীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর জেলার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম পৃথ্বীরাজ নস্কর। তিনি মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সোশাল মিডিয়া সেলের মিডিয়া কনভেনারের দায়িত্বে ছিলেন। সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন পৃথ্বীরাজ। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

শুক্রবার রাতে মন্দিরবাজারের দ্বীপের মোড় বাসস্ট্যান্ডের কাছে পার্টি অফিস থেকে পৃথ্বীরাজ নস্করের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে খুন করা হয়েছে ছেলেকে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। তারপর পরিকল্পনা করে দেহটি বিজেপি কার্যালয়ে ফেলে রেখে গিয়েছে। গত চারদিন ধরে তালাবন্ধ ছিল পার্টি অফিসটি। পৃথ্বীরাজের বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে ওই কার্যালয়টি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ। সক্রিয় ভাবে কাজ করা জন্যই দলের তরফে সোশাল মিডিয়া সেলের মিডিয়া কনভেনারের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বাড়িতেই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এরপর সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পৃথ্বীরাজের তিনটি ফোন কখনও বন্ধ ছিল, কখনও রিং হয়ে যাচ্ছিল।


পার্টি অফিসটি দিন চারেক ধরে বন্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পার্টি অফিসের জানলা দিয়ে উঁকি মারতেই আঁতকে ওঠেন তাঁরা। মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় পৃথ্বীরাজকে। পুলিশ তালা ভেঙে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে তাঁকে উদ্ধার করে। দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্নও মিলেছে। দেহে কোনও পোশাক ছিল না। ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার দেহটি ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর সময় এলাকায় ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ লেখা ব্যানার লাগিয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ। সেই ব্যানারের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই তৃণমূলের কিছু স্থানীয় নেতা তাঁকে হুমকি দেয়। ব্যানার খুলে ফেলার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে তাঁরা। মৃতের পরিবারের দাবি, তৃণমূলই সক্রিয় এই বিজেপি কর্মীকে অপহরণ করে খুন করেছে। তার পর দেহ ফেলে রেখে গিয়েছে।

যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এই অভিযোগ মানতে চাননি। জোড়াফুল শিবিরের দাবি, লোকসভা ভোটে প্রচারের জন্য বিজেপি প্রচুর টাকা পেয়েছিল। সেই টাকা অনেকেই লোপাট করে ফেলেছেন। টাকার বখরা নিয়ে দলের অন্দরে গোলমাল চলছিল। সেই গোলমালের জেরে খুন হয়ে থাকতে পারেন পৃথ্বীরাজবাবু।