• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিজেপির রিপোর্ট তদন্তকে প্রভাবিত করবে অনুব্রতকে গ্রেফতারের ছক কষা হচ্ছে: মমতা

বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম থাকায় বিজেপির এই বগটুই রিপোর্টকে ‘অভিসন্ধিমূলক' বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনুব্রত মণ্ডল (Photo: IANS) এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: Kuntal Chakrabarty/IANS)

বগটুই কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের মধ্যেই সত্য অনুসন্ধানের জন্য পাঁচ সদস্যের দল তৈরি করেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বুধবার সেই প্রতিনিধিদল একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে। যেখানে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই রিপোর্ট নিয়ে বুধবার পাহাড়ে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দার্জিলিংয়ে মহাকাল মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, বিজেপির প্রতিনিধিদলের এই রিপোর্ট তদন্তকে প্রভাবিত করবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo:SNS)

বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম থাকায় বিজেপির এই বগটুই রিপোর্টকে ‘অভিসন্ধিমূলক’ বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বগটই নিয়ে কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। এই তদন্তে সবরকমের সহযোগিতা করছে রাজ্য সরকার। তদন্ত সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই কীভাবে বিজেপি বলছে, কারা জড়িত, কাদের নাম রয়েছে। বকটুই কাণ্ডে যেখানে সিবিআই তদন্তই এখনও সম্পূর্ণ হয়নি, সেখানে কীভাবে ওরা আমার জেলা সভাপতি নাম বলল রিপোর্টে?

বিজেপির এই বকটুই রিপোর্টকে অনুব্রতকে গ্রেফতারের ছক হিসেবেই দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবারই মমতা অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্রের সরকার বিভিন্ন সময়ে এজেন্সিকে ব্যবহার করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ব্যতিব্যস্ত করছে।

বিষয়টিকে গণতন্ত্রের আঘাত হিসেবে ব্যাখ্যা করে এই ইস্যুতে সমস্ত অবিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একজোট হয়ে বৈঠক করার জন্য মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ওপরে বিভিন্ন সময়ে এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে এইভাবে আগে থেকেই জাতীয় এজেন্ডায় পরিণত করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাগটুই নিয়ে বিজেপির রিপোর্ট পেশ করার প্রেক্ষিতে এজেন্সিকে যে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে সেই দাবিকে আরও শক্ত জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত করলেন মমতা বকটুই কাণ্ড নিয়ে বিজেপির রিপোর্টে অনুব্রত মণ্ডলের নাম থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বললেন, বিজেপি চায় ওকে গ্রেফতার করা হোক বিষয়টি যখন রাজনৈতিক ইস্যুই নয়, তাহলে বিজেপি কেন এত মাথা গলাচ্ছে? আসলে যে রাজনৈতিক দলই বিজেপির বিরোধিতা করবে, তাদের কন্ঠরোধ করতে চায় ওরা।

তাই কখনও পওয়ারজির লোককে ধরছে কখনও উদ্ধবের লোককে, আবার কখনও স্ট্যালিনের লোককে। বকটুই নিয়ে তৃণমূল সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার বিষয়টিকে লঘু করতে এইভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির তত্ত্ব নিয়ে এলেন মমতা ভূমিকারও নিন্দা করে মমতা বলেন, সরকারকে অবশ্যই দেখতে হবে রাজনৈতিক কারণে তদন্তকে যেন পরিচালিত না করা হয়।

ক্ষমতার অপব্যবহার তদস্তকে ভুলপথে চালিত করবে। মানুষ তদন্তকারী সংস্থার ওপর বিশ্বাস হারাবে। দল এবং সরকারের মধ্যে যে পার্থক্য থাকা উচিত, তার ব্যাখ্যা দিয়ে মমতা বলেন, দলের সভাপতি এক কথা বলবেন সরকার অন্য কথা বলবে। দল আর সরকার কখনই নয়।

বুধবার শুধু বিজেপিই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতা নিয়েও বুধবার দার্জিলিং এর ম্যালে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা।

বললেন, আমি আমার রাজ্যের পড়ুয়াদের বিনামূল্যে তাঁদের কোর্স সমাপ্ত করার জন্য অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও কোনও অনুতি দেয়নি। এটাই ওদের মনোভাব। কাউকে সাহায্য করে না, কেবল প্রতিহিংসার রাজনীতি করে।

বুধবার খারাপ আবহাওয়া থাকায় দার্জিলিংয়ে প্রাতঃভ্রমণে যাননি মমতা। একটু বেলায় রিমন্ড হিল থেকে পায়ে হেঁটে মহাকাল মন্দিরে পুজো দিতে এলেন তিনি। পুজোর প্রসাদ বিতরণ করলেন স্থানীয়দের মধ্যে।

এদিন সাতাশ দিনের এক শিশুকে নিয়ে মহাকাল মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন এক পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী এদিন মায়ের কোল থেকে শিশুটিকে নিজের কোলে তুলে নেন। তারপর পরিবারের হাতে কিছু টাকাও দেন উপহার হিসেবে।