রাজ্যে বিদ্যুৎ-এর মাসুল হ্রাস করা সহ একাধিক দাবিতে সিইএসসি ভবন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। এদিন এই অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল চাঁদনি চক এলাকা। বিজেপিকর্মীদের রুখতে পুলিশের তরফে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল, ব্যবহার করা হয় জলকামান। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের একপ্রকার ধস্তাধস্তি শুরু হলে করা হয় লাঠিচার্জ।
সিইএসসি ভবন অভিযানে যােগ দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতা-কর্মীরা বিজেপির রাজ্য সদর দফতরের সামনে অপেক্ষা করছিলেন। এই মিছিলের আয়াজন করে রাজ্য বিজেপি যুব এবং মহিলা মাের্চা। সামনে থেকে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, যুব মাের্চা সভাপতি দেবজিৎ সরকার, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু মিছিলের নেতৃত্ব দেন। মােট তিনটি ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল পুলিশের তরফে।
প্রথম দুটি ব্যারিকেড ভেঙে তৃতীয় ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা শুরু করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। চাঁদনি চকের ই-মলের সামনে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। এঘটনার পরই রণক্ষেত্রের কার ধারণ করে গােটা এলাকা। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয় তা থামাতে পুলিশের তরফে জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাসের বেশ কয়েকটি সেল ফাটানাে হয়।
এরপরও লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এঘটনায় মাথা ফেটেছে বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীর। আহত হয়েছেন বেশকয়েকজন। পুলিশের লাঠিচার্জের পাল্টা ইট ছুড়তে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি কর্মীদের ছােড়া ইটে ১ পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এঘটনার পরই পুলিশের বিরুদ্ধে তােপ দাগেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁরা বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবেই তাদের মিছিল চলছিল। মিছিলকে বিশৃঙ্খল বানাতে প্ররােচিত করেছে পুলিশ। হুগলির সাংসদ তথা বিজেপি মহিলা মাের্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় সিইএসসি কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ গােয়েঙ্কা গােষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, অন্য রাজ্যে কম টাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে পারলেও এরাজ্যে কেন বেশী টাকা বিদ্যুতের মাশুল নেওয়া হয়? সাধারণ মানুষকে যারফলে বেশী টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা পেতে হচ্ছে।
যুবমাের্চা সভাপতি দেবজিৎ সরকার বলেন, বিদ্যুৎ-এর মাশুল নির্দিষ্ট করতে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকতে হবে সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে। রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল চালাচ্ছেন সঞ্জীব গােয়েঙ্কা। তাই তাঁকে বাঁচাতে পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছেন দিদিমণি। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।
এদিনের এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, দিল্লিতে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অমিত শাহ। অমিত শাহ-এর সঙ্গে বৈঠকেই রাজ্য প্রশাসনিক অত্যাচারের অভিযােগ তােলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ। এদিনের আন্দোলন প্রতিহত করতে পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কেও কথা বলেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, একথা শােনার পরই বৈঠকের মধ্যে টিভি চালাতে বলেন অমিত শাহ। টিভিতে জলকামান, লাঠিচার্জের ফলে কর্মীদের আহত হওয়ার ঘটনা দেখে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে নিজের মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এনিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপাের্ট চেয়েছেন বলেও জানা গেছে।