• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বিজেপি ‘ড্যান্সিং ড্রাগন’, ভবানীপুর থেকে নতুন করে খেলা হবে: মমতা

ভারতবর্ষকে নতুন করে দেখার ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শােনা গেল নতুন করে খেলা হবে’ স্লোগান।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo:SNS)

ভবানীপুর থেকে ভারতবর্ষ নতুন করে দেখার ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শােনা গেল নতুন করে খেলা হবে’ স্লোগান। আসলে এই নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকে প্রায় শেষ পর্যন্ত একটা বার্তাই দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল, তা হল আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের দাপট বাড়ানাে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আগের থেকে অনেক বেশি কনফিডেন্ট।

সেকারণে নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, এই নির্বাচনের সঙ্গে রাজ্যে স্নকার গড়ার কোনও সম্পর্ক নেই। তাকে ভােট না দিলে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কিন্তু তাকে আর পাওয়া যাবে না। আসলে তিনি আগের মতােই সেই আটপৌরে ভাষায় বার্তা দিতে চেয়েছেন ভবানীপুরকে। তিনি যে প্রকৃত অর্থে ঘরের মেয়ে তা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন নির্বাচনী সভাগুলিতে।

এদিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্কের কথা বিভিন্ন ছােট ছােট উদাণ দিয়ে তুলে ধরেন। এখানকার ক্লাব, সেই সঙ্গে পুজো কর্তাদের সঙ্গে তার যােগাযােগ এবং তিনি সময় করেই তাদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করেন। নিত্যপ্রয়ােজনীয় জিনিসের দাম জিজ্ঞেস করেন। দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলেন। আসলে এভাবেই আমজনতার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্ক রেখে সরকার চালাতে ভালোবাসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর নির্বাচনী সভাতেও এই ছােট ছােট তাকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে তারই মন্তব্যে।

তবে এদিন মমতার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বক্তব্য, “ভবানীপুর থেকে নতুন করে খেলা শুরু হবে। আর এই খেলা শেষ হবে ভারতবর্ষে। জাতীয় স্তরে আমরা লড়ব জিতব। জয় বাংলা’র খেলায় আমরা আগেই জিতেছি এবার দেশের মাটিতেও জিতব।”

রবিবার সন্ধ্যাবেলায় নিজের পাড়ার মােড়ে সভা করে নির্বাচনী প্রচারে ইতি টানলেন তৃণমূল সুপ্রিমাে তথা ভবানীপুরের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩০ তারিখ বৃহস্পতিবার ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচন। নিজের চেনা কেন্দ্রে শাসকদলের হয়ে লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, সােমবার প্রচারের শেষ দিন।

কিন্তু এদিন রাজ্যে দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে যথেষ্ট। ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ দাপট দেখাতে পারে তার জন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সাবধানী। জনগকে আগেভাগেই সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। কলকাতায় যাতে পরিস্থিতি বিপজ্জন্ম না হয়ে ওঠে তার জন্য কলকাতা পুরসভা এবং সিইএসসি’কে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বার্তা দিয়েছেন।

এদিন পদ্মপুকুরে যদুবাবুর বাড়িতে তার সঙ্গে যৌথ নির্বাচনী প্রচারে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই সভা সেরে সন্ধ্যা নাগাদ মমতা-অভিষেক পৌছে যান কালীঘাট মােড়ে (হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে)। এটাই মমতার পাড়া। প্রতিবারই এই মােড়ে সভা করে নির্বাচনী প্রচারে ইতি টানেন মমতা। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। এখানেও তার সঙ্গী ছিলেন অভিষেক।

মমতা এদিন ভবানীপুরের ভােটারদের উদ্দেশে বলেন, মাথা ঠান্ডা রাখুন। ৩০ তারিখ সময় মতাে ভােট দিন। এক নম্বর বােতাম টিপে তৃণমূলকে জেতান। মাথা ঠান্ডা করে ভােটটা করে দিন। আর তারপর ভারতবর্ষটা আমাকে করতে দিন। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার নােম সফর বাতিল করার জন্য কেন্দ্রকে ফের তুলােধনা করেন।

বলেন, এভাবে আমাকে আটকে রাখা যাবে না। ইতালি সরকার আমাকে বিশেষ অনুমােদন দিয়েছিল। কিন্তু আমাকে যেতে দেওয়া হল। আমি এখান থেকেই বিশ্ব শান্তির বার্তা দেব। এই বাংলা, এই ভবানীপুরের মাটি থেকেই দেব বিশ্বশান্তির বার্তা।

এই প্রথম নয়, আগেও আমার বিদেশ সফর বাতিল করা হয়েছিল। শিকাগাে ও চিন সফর বাতিল করা হয়েছিল। এই বাংলা শান্তির কথা বলে। এই বাংলা সকলকে নিয়ে চলে। বাংলা দাঙ্গাকে প্রশ্রয় দেয় না। দাঙ্গাবাজলের কোনও ধর্ম হয় না। আর এই ভবানীপুর তাে একটা টোখাট ভারতবর্ষ। যেখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, পাঞ্জাবি সকলের সহাবস্থান।

এদিন তিনি অসম, উত্তর প্রদেশ, ত্রিপুরায় গুণ্ডারাজের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিজেপি’কে তুলােধনা করেন। কংগ্রেস ও সিপিএমকেও ছাড়েননি। এই তিন দল নিজেদের মধ্যে আঁতাত করে চলে বলেও মমতা দাবি করেন।

ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী বিজেপি’কে নিশানা করে বলেন, “বিজেপি তাে ডান্সিং ড্রাগন। অসমে মৃতদেহের ওপর উঠে নাচছে। এটা কি কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ? নাকি তাদের শােভা পায়।

এদিন যদুবাবুর বাজারের সভাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে বক্তব্য রাখেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ মালা রায়, বিধায়ক দেবাশিস কুমার। শিল্পী নচিকেতা এদিন মমতার প্রচারে অংশ নেন এবং একদিন ঝড় থেমে যাবে এই গানটির দু’লাইন পরিবেশন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে।