বিজেপি বাংলাকে গুজরাত বানাবে: দিলীপ ঘােষ

দিলীপ ঘােষ (File Photo: IANS)

বিগত বাম আমলে পশ্চিমবঙ্গকে শােষণ করে করে এই রাজ্যের একেই বেহাল অবস্থা তৈরি করে দিয়েছে বামেরা। তারপরে উন্নয়নের স্লোগান দিতে দিতে তৃণমূল এই কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আরও খারাপ করে দিয়েছে। যতটুকু উন্নতি হয়েছে তা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ভাই আর ভাইপােদের। দিদিমনির পাপের বােঝা বইতে হচ্ছে বাংলার জনগণকে।

সোমবার সকালে বারাসাতে চিকিৎসক সংগঠন ও আইনজীবীদের সাথে চায় পে আড্ডা আসরে যােগদান করে রাজোর শাসক দলকে কার্যত এভাবেই তুলােধােনা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ।

এদিনের অনুষ্ঠানে বিজেপি রাজ্য সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বারাসত বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চ্যাটার্জি। রাজ্যের বর্তমান অবস্থা ব্যক্ত করতে গিয়ে দিলীপ ঘােষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের মুখে সবসময় উন্নয়নের স্লোগান।


কিন্তু ভারতের অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির পূর্বের অবস্থা ও এখনকার অবস্থা দেখলে তারা বুঝতে পারবেন একটি রাজ্যের উন্নয়ন কিভাবে করতে হয়। টাটার মত সংস্থাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়িয়ে চপ শিল্পের দ্বারা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাম আমল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের কাজবাজ এর অবস্থা ক্রমশ খারাপ থেকে অতি খারাপের দিকে গেছে। আগে যেই পশ্চিমবঙ্গ দেশকে ভালাে ভালাে ডাক্তার, উকিল, বিজ্ঞানী, আইপিএস উপহার দিত। এখন সেই পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র পরিযায়ী শ্রমিক তৈরি হয়। যারা দু’মুঠো অঢ়ের প্রত্যাশায় ভিন রাজো পাড়ি দেয়।

তাই পশ্চিমবঙ্গকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করে নতুন এমনভাবে গড়তে হবে, যাতে কাজের জন্য মানুষকে নিজের রাজ্য না ছাড়তে হয়। আর এই উপহার বাংলার জনগণকে দিতে পারে একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টি। মােদি ঝড়ের কারণে যেখানে ভারতের পুরনাে রূপ পরিবর্তিত হতে পারে, সেখানে বাংলার জনগণ বিজেপির উপর ভরসা রাখলে, বাংলার ও এই বেহাল অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

সেইসঙ্গে তিনি জানান, যেখানে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজ্য সরকার এত তােলপাড় করছে। সেখানে সমীক্ষা দেখলে বােঝা যাবে, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে সবথেকে বেশি। ঝামেলার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের ঘটে। সারা ভারতে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে হই হট্টগােল বন্ধ হয়ে গেলেও, পশ্চিমবঙ্গের  এখনাে চলছে। উজানি মুলক মন্তব্যের মাধ্যমে এখানে মানুষদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার যেখানে ধর্ষণ নিয়ে এত গলা ফাটাচ্ছে। সেখানে সমীক্ষা অনুযায়ী। পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বেশি নারীদের উপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটে। এখানে ৬০ থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা মহিলারাও নিতি পায়না। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে আমাদের ঘরের মা, বােন বা মেয়েরা ঘরের বাইরে গেলে, পুনরায় ঘরে না ফেরা পর্যন্ত আমাদেরকে চিন্তা করতে হয়।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খােদ যেখানে একজন মহিলা, সেখানে মহিলাদের এরূপ অবস্থা সকলের কল্পনাতীত। এছাড়াও যেখানে কাশ্মীরের মত জায়গা নরেন্দ্র মােদির আমলে ঠান্ডা হয়ে গেছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ থেকে জঙ্গি ধরা পড়ছে। তাই নিজেদের স্বার্থে বাংলার জনগণকে এই রাজ্য থেকে তৃণমূলকে বিতাড়িত করতে হবে।

বাংলায় উন্নতি করবার সুযােগ বিজেপি ব্যতীত প্রায় সকল রাজনৈতিক দলই পেয়েছে। এইবার বাংলার জনগণকে একবার বিজেপির উপর পূর্ণ আস্থা রেখে এই সুযােগ দিতে হবে। একটা উন্নততর , সুশৃংখল রাজ্য কিভাবে গড়ে তুলতে হয় তা সকল কে দেখিয়ে দেবে ভারতীয় জনতা পার্টি।

অপরদিকে, এদিন উদ্বাস্তু অধ্যুষিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় দাঁড়িয়ে ফের নাগরিকত্ব আইনে সকলকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা জানান দিলীপ ঘােষ। পাশাপাশি তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সর্বদা বলেন বিজেপি বাংলাকে গুজরাট বানানাের চক্রান্ত করছে। আমি তাকে বলতে চাই, হ্যাঁ , বিজেপি বাংলাকে গুজরাট বানাবে যাতে বাংলার মানুষজনকে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্য গুজরাটে না যেতে হয়। তারা যেন এখানেই কাজ করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করবে বিজেপি।

পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের পাশাপাশি কৃষকদের উপরেও অনাচার করতে তৃণমূল ছাড়েনি। কেন্দ্র কৃষকদের জন্য টাকা দিলেও, রাজ্যের কৃষকেরা সেই টাকা পাচ্ছেন না। বছর ধরে সকলের দাবি কেন্দ্র আমাদেরকে দেখছে না। তাই এইবার কেন্দ্র যাতে বাংলার মানুষ জনকে সরাসরি দেখতে পারে, তার জন্য বাংলার মানুষজনকে একবার হলেও বিজেপির উপর ভরসা করতে হবে। একই সাথে রাজোর খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘােষ বলেন, উনি যেখানেই দাঁড়িয়ে নির্বাচন লড়ুক না কেন, হারবেন। তাই উনি নিজে ঠিক করুক কোন সিটে দাঁড়িয়ে উনি হারবেন।