রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও হুমায়ুন কবীরের বাকযুদ্ধের জের। পর পর তিনদিন ধরে উত্তাল হয়ে উঠল বিধানসভার কক্ষ। মঙ্গল ও বুধের পর বৃহস্পতিবারও ওয়াক আউট করলেন বিজেপি বিধায়করা। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর শুভেন্দু অধিকারীকে ‘ঠুসে দেব’ মন্তব্যের জেরে গেরুয়া শিবিরের বিধায়কদের এই প্রতিবাদ।
প্রসঙ্গত গত সোমবার মুসলিম বিধায়কদের ‘চ্যাংদোলা’ করে ফেলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। নন্দীগ্রামের বিধায়কের এই মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি শুভেন্দুকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমাকে মারতে এলে ঠুসে দেব।’ হুমায়ুনের এই বিতর্কিত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন বিজেপি বিধায়করা। কিন্তু অধ্যক্ষ এব্যাপারে অনুমতি দেননি। যার জেরে ক্ষিপ্ত হন শঙ্কর ঘোষ সহ অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা।
প্রতিবাদে তাঁরা অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বিধানসভার গেটের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবারেও তাঁরা অধিবেশন কক্ষ বয়কট করেন। বিজেপি বিধায়কদের দাবি, বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য শুভেন্দুর কাছে হুমায়ুনকে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে পদক্ষেপ করা হবে। এদিন প্রতিবাদী বিধায়করা অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। যদিও সামগ্রিক বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে মুর্শিদাবাদে ঢুকুন।’
এদিকে গত কয়েকদিন আগে বিধানসভায় জরুরি কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান বিজেপি বিধায়করা। যার ফলে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে বিজেপি বিধায়কদের কার্যবিবরণী দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রতিবাদে সরব হন বিজেপি বিধায়করা। বিষয়টি নিয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন, এটা গণতন্ত্র হতে পারে না। বিজেপি বিধায়করা কাগজ পাবেন না! অধ্যক্ষ দলের নেতার মতো আচরণ করছেন।’
প্রতিবাদে গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা বাড়ি থেকে কাগজ এনে প্রতিবাদ করেন। এসবের মাঝে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ফের প্রতিশ্রুতি দেন, বিধানসভার নিয়ম মানলে বিজেপি বিধায়কদের কার্যবিবরণী দেওয়া হবে।