বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় মুহাম্মদ ইউনূস সরকার কার্যত কোনও পদক্ষেপ করছে না। এই আবহে ইউনূস নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য কি না তা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানালেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। এ বিষয়ে তিনি নোবেল কমিটিকে একটি চিঠি লেখেন। তাঁর দাবি, হিন্দু নিধন করে যে ইউনূসের হাত রক্তাক্ত, তাঁর কাছে শান্তির জন্য পাওয়া নোবেল পুরস্কার গরিমা হারায়। ইউনূসের নাম আজ হিংসা ও অবিচারের সঙ্গে জড়িয়েছে।
নোবেল কমিটিকে লেখা ওই চিঠিতে জ্যোতির্ময় লিখেছেন, ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশে হিন্দুদের গণহত্যা চলছে। সরকারি মদতে বেছে বেছে হিন্দুদের কলোনিতে আক্রমণ করা হচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ধর্মপালনের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর মতো উৎসবেও নানাভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি সাংসদের চিঠিতে বিজেপি বিধায়ক চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ধর্মগুরুদের বিভিন্নভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। জ্যোতির্ময়ের কথায়, ‘নোবেল পুরস্কারের গরিমা রক্ষা করতেই ইউনূসের নোবেল কেড়ে নেওয়া উচিত। নোবেল কমিটির উচিত ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিবৃতি জারি করা।’
উল্লেখ্য, মাক্রোফিন্যান্স নিয়ে বিশ্বজুড়ে মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেছে নোবেল কমিটি। এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে কমিটিকে চিঠি পাঠালেন জ্যোতির্ময়। চিঠিতে তিনি নোবেল কমিটির নৈতিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এর আগে নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত হেনরি কিসিঞ্জাসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিজেপি সাংসদ চিঠিতে তাঁর প্রসঙ্গও উল্লেখ করে বলেন, ইউনূস তাঁর মতোই ‘হিন্দু হত্যাকারী কসাই’।
বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর পাশাপাশি ইউনূসের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘শান্তির জন্য যে মানুষটাকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল, তিনি তাঁর নিজের দেশেই শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চূড়ান্ত ব্যর্থ। তিনি কি আদৌ কিছু করতে পারছেন? হাস্যকর নানা বিবৃতি দিচ্ছেন।’
এছাড়াও বিমান আরও বলেন, ‘নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে আমি মতামত দেওয়ার কেউ নই। কিন্তু এরকম একটা মানুষকে কেন নোবেল দেওয়া হয়েছিল সেটাই প্রশ্ন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে খুব ভালবাসতেন ওপার বাংলার মানুষ। আমি নিজে ওখানে গিয়েছি। আমার পরিবারের লোকরা ওখানে ছিল। কিছু মৌলবাদী লোক ইচ্ছাকৃতভাবে এই সন্ত্রাস তৈরি করছে। এর প্রতিবাদ করতেই হবে। সবার একসঙ্গে প্রতিবাদ করা উচিত।’