তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে তোলাবাজির ঘটনায় তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার কলকায়তার এমএলএ হস্টেল থেকে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে, এক বিজেপি বিধায়কের সুপারিশেই এমএলএ হস্টেল থেকে ধৃত তিন প্রতারককে ঘর দেওয়া হয়েছিল। এবার ওই বিধায়ককে তলব করল পুলিশ।
শেক্সপিয়র সরণি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-কে তলব করা হয়েছে। পুলিশ ই-মেলের মাধ্যমে তলব করেছে তাঁকে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম জুনেদুল হক চৌধুরী, শুভদীপ মল্লিক ও শেখ তসলিম। ধৃত জুনেদুলের বিরুদ্ধে আগেও হুমকি ফোনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগে তাকে আগে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। জামিনে মুক্তি হওয়ার পর ফের একই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। ওই তিন যুবক পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তের কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে পাঁচ লক্ষ টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে কালনা পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে চেয়ারম্যানকে হুমকি দিয়ে ওই অভিযুক্তরা ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা অভিযুক্ত যুবকরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে ফোন করা হচ্ছে হলে হুমকি দেয়। তারা দাবি করে, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক জায়গা থেকে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ রয়েছে। যদি ৫ লক্ষ টাকা না দেন, তাহলে যে কোনও মুহূর্তে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। শুরু হবে পুলিশি ধরপাকড়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এই ফোন পেয়ে কালনা পুরসভার চেয়ারম্যানের যথেষ্ট সন্দেহ হয়। তিনি তখন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয় শেক্সপিয়ার সরণি থানায়। এরপর পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে চটজলদি অভিযান চালিয়ে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে।
কলকাতার এমএলএ হস্টেলের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র ঘরটি তারা বুক করেছিল। বিধায়কের ঘর থেকেই ওই তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনা প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একজন বিজেপি বিধায়কের সুপারিশেই ঘর দেওয়া হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। এদিকে এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত থাকতে পারে দাবি করেছেন বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে।
তিনি বলেন, আমার লেটারহেড, সই সব জাল করা হয়েছে। কী করে এমন একটা চিঠিতে ঘর দেওয়া হল, তা জানতে চেয়েছি হস্টেল সুপারের কাছে। বিধানসভার সচিবকে চিঠি দিয়েও এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করব। এই ঘটনার পিছনে শাসকদলের রাজনৈতিক চক্রান্ত থাকতে পারে। তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা রায় হস্টেল সুপারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। তাঁর বক্তব্য, মন ঘটনা কী করে ঘটল, তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। এ বার থেকে আমরাও আরও সতর্ক হব।