গত কয়েকদিন ধরেই জঙ্গলমহলে মাওবাদী আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পোস্টার পড়াকে কেন্দ্র করে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম থেকে প্রায় প্রতিদিনই উদ্ধার হচ্ছে মাওবাদী পোস্টার। তার কোনওটায় হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে পুলিশকে।
কোথাও আবার বলা হচ্ছে, এবার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে খেলব। সোস্যাল মিডিয়াতেও এইসব পোস্টার ভাইরাল হচ্ছে। যা স্বাভাবিকভাবে রাজ্যজুড়ে নতুন করে মাওবাদী হামলার আশঙ্কা প্রকট করে তুলছে।
বুধবার নবান্নের বৈঠকে সেই মাও আতঙ্ক খারিজ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন আমার কাছে খবর আছে কোথাও কোথাও এরকম একটা দু’টো পোস্টার লাগিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। সেটা নিয়েই মাওবাদী মাওবাদী করে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। সবটাই পরিকল্পনামাফিক করছে বিজেপি।
এজন্য পুলিশকে জঙ্গলমহলে পুলিশকে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক ও সুপারদেরও আরও সক্রিয় থাকতে বলেন তিনি। বুধবারের বৈঠকে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পোস্টার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। জবাবে জেলাশাসক ও সুপারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পোস্টার উদ্ধার হলেও মাওবাদী কার্যকলাপ মাথাচাড়া দেওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই তথ্যটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত। এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, খুব শিগগির তিনি ঝাড়গ্রাম সফরে যাবেন। আগামীদিনে আরও বেশি সংখ্যক মাওবাদীদের চাকরি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন মমতা।
প্রসঙ্গত, একটা সময় মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল ছিল বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামের বেশ কিছুটা অঞ্চল। মমতা সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মাওবাদীদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে প্রায় দশ হাজার মাওবাদীকে হোমগার্ডে ও জঙ্গলমহলের নিরাপত্তা বিভাগে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই অন্যরকম। এর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে জঙ্গলমহল এলাকায় মাওবাদী পোস্টার পড়া নিয়ে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সমন্বয় করে কাজের কথা বলেন। নাকা চেকিং বাড়ানোর পরামর্শ দেন। কোথাও কোথাও থানার আইসি’রা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন না বলেও অভিযোগ করেন।