• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি : মমতা

বর্তমানে বিজেপির কিছু নেতা বলে চলেছেন, অনলাইনে ফর্ম ফিল অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

এনআরসি ও সিএএ'র প্রতিবাদে পদযাত্রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাস। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব থেকে শুরু করে অনুকুল ঠাকুর সহ নানা ধর্মীয় স্থানে পূর্ণ এই জেলা। তবে সকল সম্প্রদায়, ধর্মের উর্ধ্বে আমাদের একটাই পরিচয়, এখানকার নাগরিক। সবাইকে নিয়ে একত্রে কীভাবে পথ চলতে হয়, সেটিই আমাদের মূল শিক্ষা। আমরা চাই সবাই একত্রিত হয়ে বসবাস করুক। সেই কারণেই শুধুমাত্র এই জেলা নয়, রাজ্যজুড়ে যেসব উদ্বাস্তু আশ্রয়হীনভাবে বসবাস করেছিল, তাদের রাজ্য সরকার নাগরিকত্ব প্রদানের পাশাপাশি স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্যও প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

রাজ্যের সব উদ্বাস্তু কলােনি আইনত স্বীকৃত। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপির কিছু নেতা তাদের পুনরায় নাগরিকত্ব প্রদানের নামে ভুল বােঝানাের চেষ্টা করছে। যাদের রাজ্য সরকার আইনত বসবাসের স্বীকৃতি দিয়েছে। ভােটদানের মাধ্যমে তারা প্রতি বছর নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছে। বিজেপি তাদের আবার নতুন করে কীভাবে নাগরিকত্ব দেবে? ভুল বােঝানাের মাধ্যমে তারা মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা থেকে বারাসত পর্যন্ত এনআরসি ও সিএএ’র প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার সূচনার আগে বক্তব্য রাখাকালীন একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পূর্ণেন্দু বসু, সুজিত বসু, ব্রাত্য বসু, ইন্দ্রনীল সেন, সাংসদ কাকলি ঘােষ দস্তিদার, বিধায়ক রথীন ঘােষ, পার্থ ভৌমিক, বিধানসভার মুখ্যসচেতক নির্মল ঘােষ, জেলা কার্যকরী সভাপতি নারায়ণ গােস্বামী প্রমুখ।

মমতা বলেন, কেন্দ্রের জনবিরােধী, সংবিধানবিরােধী আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে বাম-কংগ্রেসের বেশ কিছু নেতা-কর্মী আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, পথ অবরােধ, সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে তােলার যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে, সেটিও আইনবিরােধী।

তাঁদের উদ্দেশে মমতা বলেন, আন্দোলনের নামে জলঘােলা করতে অনেকে পথে নেমেছে। বাস ভাঙচুর, রেললাইনে বােমা রেখে, মানুষের উপর অত্যাচার করে আন্দোলন হয় না। সব দলের নেতাদের মনে রাখা উচিত, মানুষের সমর্থনেই তাঁরা নেতা হয়েছেন। তাদের উপর অত্যাচারের জন্য নয়। সবাই জানিয়ে পথে নামলে তবেই সেটি আন্দেলানের রূপ নেয়। সেটি সর্বদাই শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত।

অনেক দলের নেতারা বলেন, ‘আমরা এদের পক্ষে, আমরা ওদের পক্ষে’। এভাবে জনসাধারণের পাশে দাঁড়ানাে সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার শুধুমাত্র সব মানুষের পক্ষে, যারা মানুষের জন্য লড়াই করেছে, করে চলেছে ও ভবিষ্যতেও করবে। মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে কোনও দিন রাজনতি করা সম্ভব নয়।

মমতা বলেন, ‘কুৎসা ও অপপ্রচারে কেউ কান দেবেন না। বিভ্রান্ত করার জন্য নানাবিধ অপপ্রচার করে চলেছে কিছু অসৎব্যক্তি। সকলের মনে রাখা উচিত, ভারতে বসবাসকারী সবাই নাগরিক। আর এই নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার অধিকার কারওর নেই।

বর্তমানে বিজেপির কিছু নেতা বলে চলেছেন, অনলাইনে ফর্ম ফিল অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে তারা তাদের নিম্নমানের শিক্ষাগত যােগ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন। অনলাইনে একটি মানুষ সম্পর্কে তথ্য যাচাই করে দেখা যেতে পারে। নাগরিকত্ব দেওয়া সম্ভব নয়। কাজকর্ম ছেড়ে মানুষকে ফর্ম ফিল আপ করতে বসলে বাড়িতে ভাত জুটবে না। তাই এই গুজবে কান না দিয়ে রাজ্য সরকারের উপর আস্থা রাখার জন্য অবেদন জানান তিনি। বক্তব্য শেষে তিনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন।