‘রাজীব ভবন’। তুমি কার? এতদিন ছিল কংগ্রেসের, রাতারাতি দখল নিল গেরুয়া বাহিনী।
নদিয়ার রানাঘাট ১ নম্বর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি স্বপন ঘােষ বিজেপিতে যােগ দেওয়ার পর এই ভবন নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতাের। বুধবার তাহেরপুরে নরেন্দ্র মােদির সভায় স্বপন ঘােষ বিজেপিতে যােগ দিয়েছেন। দলত্যাগ করার পর তিনি এখনও এই অফিস খােলেননি। কিন্তু এই ভবনে ‘রাজীব ভবন’ লেখা ও হাত চিহ্ন গেরুয়া রঙ দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে ফলকটি। যেখানে লেখা ছিল ‘রাজীব ভবন’ উদ্বোধন- শঙ্কর সিংহ, বিধায়ক ও সভাপতি, নদিয়া জেলা কংগ্রেস কমিটি, ২৮ আগস্ট, ২০০৪।
তিনি লােক দিয়ে ওই ভবন গেরুয়া রঙ করিয়েছেন। বিজেপিতে যােগ দিয়ে তিনি রানাঘাট শহরের বিজেপি জেলা কার্যালয়ে বসেছিলেন। সেখানে রানাঘাট লােকসভায় বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে আলােচনা করেছে। তার কথায়, ‘এটা সরাসরি কংগ্রেসের কার্যালয় নয়। আমি একসময় এই কার্যালয়ে করেছিলাম। দেশের প্রাক্তন ও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির নামে আমাদের একটি সংগঠন রয়েছে। সেই কারণে কার্যালয়ের রাজীব ভবন নামকরণ করা হয়েছে। এখানে সমাজসেবামূলক কাজ করা হয়। সবাই এখানে আসে। এখন আমি বিজেপিতে যােগ দিয়েছি। সেই কারণে এখানে কয়েকটা বিজেপির পতাকা টাঙানাে হয়েছে। এই নিয়েই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এখনও সেটাই হবে।’
জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক নৌসাদ আলি বলেন, ‘এটা আমাদের দলের কার্যালয়। আনুলিয়া অঞ্চল কংগ্রেসের কার্যালয় ১৫ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। এখন স্বপন ঘােষ বিভিন্ন কথা বলছে। দল তাকে ১৫ বছর ব্লকের সভাপতি করেছিল। তার স্ত্রীকে একবার আমুলিয়া গ্রামপঞ্চায়েতে প্রধান এবং তাকে উপপ্রধান করেছিল। বিজেপিতে যােগ দেওয়ায় সেসব ভুলে গিয়েছে। আমদের দলের সদর কার্যালয়কে বিজেপির হাতে তুলে দিয়েছে। এটা আমরা মেনে নেব না।’
রানাঘাট থানার কোটমােড় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে পায়রাডাঙ্গা যাওয়ার পথে ডান দিকে রাস্তার ধারে দেখতে পাওয়া যাবে এই ভবন। রাজীব ভবন লেখার পাশে কংগ্রেসের হাত প্রতীক আঁকা রয়েছে। তবে, সেখানে কংগ্রেসের হাত প্রতীক আঁকা পতাকা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই দিন সকাল থেকে সেখানে বিজেপির পতাকা দেখতে পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। স্থানীয় শিক্ষক সুজিত ঘােষ ও স্থানীয়রা বলেন, ‘এ কি কাণ্ড। এতদিন তিনি ওই ভবনে বসে কংগ্রেস, কংগ্রেস করে চিৎকার করলেন। এখন তিনি বিজেপি হয়ে গেলেন। এমনকী তাদের কার্যালয়টাও বিজেপির কার্যালয় হয়ে গেল। এতাে দেখছি কর্তার ইচ্ছা কর্ম। একেবারে মগের মুল্লুক যে। রাজনীতির কি খেলা গাে বাপু।’