• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

অগ্রগতির পথে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়

২০ একর নিয়ে  শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের  আদলে 'বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়' গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন

শিল্প এবং শিক্ষা  কোনটিই হয়নি রাজ্যের বামফ্রন্ট  সরকারের আমলে।  সিপিএমের সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়  বীরভূমের বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ থাকাকালীন সময়ে বোলপুরের অনতিদূরে রায়পুর-সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবপুর মৌজায় বলপূর্বক  ৩০০ একর ঊর্ব্বর কৃষিজমি নিয়ে নেন শিল্প স্থাপন এবং সেখানে জমিদাতাদের কর্মসংস্থানের কথা বলে। এ ব্যাপারে রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী  নিরুপম সেনকেও অবহিত করা হয়নি সেই সময়। অনেক জমির মালিক জমির দামও নেননি। জমি অধিগ্রহণের  এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই ঊর্ব্বর কৃষিজমি বন্ধ্যা হয়ে পড়ে থাকে। ওই ঊর্ব্বর কৃষিজমির উপরে যাঁরা নির্ভরশীল ছিলেন, সেইসব  কৃষিজীবী  মানুষদের অনেকেই জীবিকাহীন হয়ে পড়ে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে, শিবপুর মৌজার ওই জমিকে ব্যবহার করার  ভাবনা শুরু হয়।

২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলা সফরে এসে অধিগৃহীত ওই জমির  ২০ একর নিয়ে  শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের  আদলে ‘বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়’ গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন। এবং তারপরই এখানে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়  গড়ে ওঠে।  এখানকার নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়েই ইউজিসি এই বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বীকৃতি দিলে এর পাশেই রাজ্য সরকারের  আইটি পার্কে  ২০২০ সালে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রাথমিক পর্যায়ের  বাংলা, ইংরেজি,  ইতিহাস ও গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তরস্তরে পঠনপাঠন শুরু হয়ে যায়।  বর্তমানে এখানকার  ৪৫০ জন পড়ুয়াকে  ৩৫ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা পাঠদান করছেন।  ইতিমধ্যেই বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ  হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  এবছর ১৮ ফেব্রুয়ারি সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে  জেলা প্রশাসনিক  এবং সরকারি সুবিধা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে  ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন  করার পরে, বর্তমানে এখানেই পঠনপাঠন শুরু করা হয়েছে।

এখানকার যে ২০ একর জায়গার উপরে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়  গড়ে উঠেছে, তার সঙ্গে এবার যোগ হলো অতিরিক্ত  ১১.৬৮ একর জমি। বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষ   বীরভূমের জেলাশাসকের কাছে অতিরিক্ত জমি চেয়ে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে,   বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে রাজ্য সরকারের হাতে থাকা ১১.৬৮ একর জমি জেলাশাসক বিধানচন্দ্র রায়  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে রেজিস্ট্রি ও রেকর্ড করিয়ে দিয়ে এখানে বৃক্ষরোপণও করেছেন। এর ফলে বর্তমানে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের  নিজস্ব জমির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ালো  ৩১.৬৮ একরে।  বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের   আরও কিছু নির্মাণ কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষ  জেলাশাসকের কাছে অতিরিক্ত  ৯ একর জমি চেয়ে আবেদন করেছেন। জেলাশাসক সেই আবেদনও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই জমি পেলে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের  জমির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে ৪০.৬৮ একরে।