রাজ্যে আসতে চলেছে বিনিয়ােগের জোয়ার। ফলে সুযােগ বাড়বে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। মঙ্গলবার একাধিক বিনিয়ােগ ছাড়পত্র দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। একুশের নির্বাচনের আগে বড় ঘােষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ছ’শের ওপর মেলা হওয়ার তালিকাও প্রকাশ করলেন মমতা। যে মেলাগুলি থেকে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে বলেই মনে করেন মমতা।
লকডাউনের জন্য এবছর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে বারবার বিরােধীদের সমালােচনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। এমনকী স্বয়ং রাজ্যপালও বলেছেন, এই ধরনের শিল্প সম্মেলনে কোনও ফল হয় না। বিরােধীদের দেওয়া রাজ্যের এই ‘শিল্পবিরােধী’ ইমেজ মুছে ফেলতে বিশেষ উদ্যোগ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে একাধিক বিনিয়ােগে ছাড়পত্র দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন মমতা। একদিকে একুশের নির্বাচনের বিরােধীদের সমালােচনার জবাব দিলেন। কর্মসংস্থানের দিশা তৈরি করলেন। তান্যদিকে শিল্প সম্মেলনের অভাবপুরণ করে শিল্প বিনিয়ােগের ধারাবাহিকতার প্রমাণ দিলেন।
গত বছরই নিউটাউনে সিলিকন ভ্যালির জন্য জমি দেওয়া হয়েছিল। এবার সিলিকন ভ্যালিতে কুড়িটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাকে জমি দেওয়া হল। উইপ্রাের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের জমি দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমােহর দিল রাজ্য সরকার। কলকাতায় আরও একটি ইউনিট খুলতে চায় ইনফোসিস। সেই আবেদনেও ছাড়পত্র দিতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই তথ্য প্রযুক্তি শিল্প চালু হলে, বাংলার যুব সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থান হবে। এই অতিমারীর মধ্যেও শিল্প বিনিয়ােগকারীদের লগ্নির ইচ্ছেপ্রকাশকে স্বাগত জানালেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, শুধু কলকাতা বা সংলগ্ন এলাকাই নয়। রাজ্যজুড়েই বিনিয়ােগ আসছে। জলপাইগুড়িতে একটি সিমেন্ট সংস্থাকে জমি দেওয়া হচ্ছে। সেখানে সিমেন্ট কারখান গড়ে উঠলে স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে মমতার ঘােষণা, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এবার ৬১৭ টি মেলা ও প্রদর্শনী হবে। এই সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত একটি পুস্তিকাও মঙ্গলবার নবান্নে প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সব মেলা ও প্রদর্শনী থেকে আনুমানিক ১৫৬ কোটি টাকার কেনাবেচা হয়। এবছর লকডাউরে জন্য অনেক তাঁতি কাপড় বিক্রি করতে পারেননি। হস্তশিল্পীদেরও বিকিকিনি বন্ধ হয়েছে। মেলা ও প্রদর্শনীগুলি হলে কারিগর বিক্রেতারা লকডাউনের জন্য হওয়া বিপুল ক্ষয়ক্ষতির কিছুটা বলেও পূরণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী মমতা।