বাইক রেষারেষি নিয়ে মধ্যরাতে গুলি চলল মির্জা গালিব স্ট্রিটে, গুলিবিদ্ধ ১

নিজস্ব প্রতিনিধি — বাইক রেষারেষিকে কেন্দ্র করে প্রথমে দু’দলে সংঘর্ষ, তারপর মধ্য রাতে গুলি চলল কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে। এই শ্যুটআউটের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলেন এক যুবক।
শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ শ্যুটআউটের ঘটনাটি ঘটেছে নিউ মার্কেট লাগোয়া মির্জা গালিব স্ট্রিটে। খাস কলকাতায় এই ঘটনায় রাতে শহরের পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত যুবকের নাম একলাস বেগ (২৯)। তিনি ওই সময়  কিডস স্ট্রিট ও মির্জা গালিব স্ট্রিটের সংযোগস্থলে ঘুমাচ্ছিলেন। যুবকের ডান পায়ে গুলি লেগেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। ঘটনায় অস্ত্র আইনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আহত ওই যুবকের বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে।

অবশ্য এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঠিক কী কারণে গুলি চলল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার জেরে এলাকার ফুটপাথবাসীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে।


পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে একলাস বেগ ও সোনা নামের দুই স্থানীয় যুবক বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন। সোনার বাইকটি একলাসের বাইককে ওভারটেক করে। এই নিয়েই দু’জনের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে।
এর পর বাইক রেষারেষিকে কেন্দ্র করে দু’দল যুবকের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। বিকেলে ওই দু’দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মির্জা গালিব স্ট্রিট এলাকা। অবশ্য রাত বাড়লে, ওই যুবকেরা যে যার বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু গভীর রাতে প্রায় ৮০ জন যুবক দল বেঁধে ফের ওই এলাকায় ফিরে আসেন। সেই সময় কিডস স্ট্রিট ও মির্জা গালিব স্ট্রিটের সংযোগস্থলে ঘুমাচ্ছিলেন একলাস। অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সোনা। গুলি গিয়ে সোজা একলাসের পায়ে বিঁধে যায়। এর পর এলাকা ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। সোনা এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে এই শ্যুটআউটের অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা সোনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। পাশাপাশি সোনার সঙ্গে এই ঘটনায় অন্য কেউ যুক্ত ছিল কি না, তার কাছে বন্দুকই বা কোথা থেকে এল? তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কলকাতা পুলিশের তরফে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত নজরদারি চলছে। এমনকী, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে সিসিটিভিও লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি রাতে পুলিশের তরফে পেট্রোলিংও করা হয়। শুধু তা-ই নয়, গাড়ি বা বাইক নিয়ে রেষারেষির ফলে যাতে কোনও দূর্ঘটনা না-ঘটে, সেই জন্য তৎপর ট্রাফিক পুলিশও। কিন্তু, কলকাতায় এই ধরনের শ্যুটআউটের ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আহত ওই যুবক এবং স্থানীয়রা।