• facebook
  • twitter
Monday, 16 September, 2024

সায়নের ‍বড় জয়, জামিন নিয়ে রাজ্যের আ‍বেদন খারিজ করল শীর্ষ আদালত

আরজি করের ঘটনার প্রতি‍বাদে নবান্ন অভিযান মামলায় সায়ন লাহিড়ীর জামিন বজায় রাখল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আবেদন সোম‍বার খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘ওই ছাত্রনেতার জামিন মঞ্জুর হওয়াই উচিত’।

আরজি করের ঘটনার প্রতি‍বাদে নবান্ন অভিযান মামলায় সায়ন লাহিড়ীর জামিন বজায় রাখল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আবেদন সোম‍বার খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘ওই ছাত্রনেতার জামিন মঞ্জুর হওয়াই উচিত’।
সুপ্রিম কোর্টে ‍বড় জয় হল ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ীর। সায়নকে মুক্তি দেওয়ার যে নির্দেশ হাইকোর্ট দেয়, তার ‍বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে রাজ্য। রাজ্যের সেই মামলা খারিজ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চের এই পর্যবেক্ষণ, ওই ছাত্রনেতার জামিন মঞ্জুর হওয়া উচিত। ফলে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশই ‍বহাল থাকল।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন, বিক্ষোভের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হতে হবে। কিন্তু আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পদক্ষেপ করা যা‍বে।

সোম‍বারের শুনানিতে হাই কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করায় শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি সায়নের গ্রেফতারি নিয়েও প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে, অভিযুক্ত কী সরাসরি এই ঘটনায় যুক্ত ? রাজ্য বলে, না। কিন্তু তিনি অন্যতম আহ্বায়ক। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, জামিন পাওয়ার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে ওই ছাত্রনেতার।

তার পরই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ উল্লেখ করে বিচারপতি পারদিওয়ালার মন্তব্য, ‘‘ওই ছাত্রনেতার জামিন মঞ্জুর হওয়াই উচিত। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এফআইআর খারিজের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।’’
এদিন শুনানি চলাকালীন রাজ্যের কাছে ‍বিচারক জানতে চান সায়নের বিরুদ্ধে কতগুলো এফআইআর দায়ের হয়েছে। রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে জানায়, ১১টি এফআইআর দায়ের হয়েছে সায়নের বিরুদ্ধে। পাল্টা বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা আদালতে প্রশ্ন করেন, একজন ছাত্র কীভাবে ৪১ জন পুলিশকে আহত করতে পারে?
রাজ্য জানায়, সায়নের মা বলেছেন ছেলে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। সেটাই তো পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে হবে৷ গ্রেফতারের পর ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ হেফাজতে পাঠালেও হাইকোর্ট মুক্ত করে দিচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সায়নের গ্রেফতারি নিয়ে শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়েছিল, নবান্ন অভিযান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন সায়ন। ওই কর্মসূচিতে পুলিশের কোনও অনুমতি ছিল না। এর পরও জমায়েত ও মিছিল করা হয়েছে। রাজ্যের যুক্তি ছিল, ওই কর্মসূচি কোনও ভাবেই শান্তিপূর্ণ ছিল না। এমনকি সায়নের ‍বিরুদ্ধে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বও সংযোজনের চেষ্টা করেন রাজ্যের আইনজীবী।
বিচারপতি সিংহ প্রশ্ন করেন , সায়ন কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না। জবাবে রাজ্য জানিয়েছিল, তিনি ছাত্রনেতা। এ কথা শুনে বিচারপতি ফের প্রশ্ন করেন, সে ক্ষেত্রে সায়নকে কী ভাবে ‘প্রভাবশালী’ বলা হচ্ছে? রাজ্যের যুক্তি ছিল, সায়ন প্ররোচনামূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। কিন্তু রাজ্যের এই যুক্তি খারিজ করে দেন ‍বিচারপতি।
সায়নকে মুক্তির নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। আরও বলা হয়, আদালতের নির্দেশ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। আদালতের নির্দেশ মতো শনিবার দুপুরেই জেল থেকে ছাড়া পান সায়ন।
এর পরই হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। তবে সুপ্রিম কোর্টও হাইকোর্টের নির্দেশই ‍বহাল রাখে।