জমে উঠেছে ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচার পর্ব। বৃহস্পতিবার একটি নির্বাচনী প্রচারসভা থেকে দেশজয়ের সুর বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পদ্মপুকুরে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, ভবানীপুর থেকেই ভারতবর্ষ শুরু হয়। মনে রাখবেন, ‘বি’তে ভবানীপুর। ‘বি’ থেকেই ভারতবর্ষ।
এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে মমতা বােঝাতে চাইলেন, এই নির্বাচনে জেতার পরে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের দাপট বজায় রাখবেন তিনি। ভবানীপুর থেকেই বাংলা মুখ্যমন্ত্রী পাবে। ভবানীপুর থেকেই ভারতবর্য দেখবে। বৃহস্পতিবার মমতা জনতার কাছে আবেদন করেন, তাকে ভােট দিয়ে জেতানাের জন্য, যাতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারে।
৩৬৫ দিন বাংলার মানুষের জন্য লড়াই করতে পালে। তিনি এদিন স্পষ্ট করে বলেন, ‘বিধায়ক না হলে মুখ্যমন্ত্রী থাকা শােভনীয় হবে না। যদিও তার দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায়, তিনি না থাকলেও তার দলের কেউ মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন।
একুশের বিধানসভা ভােটপর্বে যাবতীয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিজের লড়াইয়ের কথা তিনি এদিন জনতার সামনে তুলে ধরেন। বলেন, নন্দীগ্রামে মনােনয়নের দিনেই জোর করে আহত করা হল। পায়ে চোট, তাও হুইলচেয়ারে প্রচার করেছি।
কিন্তু মা-মাটি-মানুষ আমার সঙ্গে ছিল। অনেক অত্যাচার, বিজেপি ডেলি প্যাসেঞ্জারি করলেও মানুষ আমাদের জিতিয়েছে। কেউ হয়তাে ভাবতেও পারেনি তৃণমূল এত ভােটে জিতবে। তবে ঠিকমতাে ভােট হলে বিজেপি তিরিশটারও বেশি আসন পেত না।
বিজেপি বিধায়কদের দলবদল নিয়েও এদিন মন্তব্য করেন মমতা। বলেন, কয়েকটা আসন থেকে অনেকে আবার চলেও এসেছেন। আট মাস ধরে কৃষক আন্দোলন চলছে। কেউ কোনও কথাই বলছে না। কৃষকদের জন্য আমি অনেক আন্দোলন করেছি। আমি একা একা বাঁচতে চাইনা। সবাইকে নিয়ে বাঁচব। তবেই ভালাে থাকব।
তিনি নন্দীগ্রামের সঙ্গে কৃষক আন্দোলন জুড়ে মমতা বলেন, কৃষক আন্দোলনকে সম্মান জানাতেই নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছিলাম। কিন্তু ওরা কারচুপি করেছে। কোর্টে প্রমাণিত হবে। নন্দীগ্রামে তাকে হারাতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে দাবি করেন মমতা।
এদিন মমতা আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, এখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রী। আমি ছ’বার দক্ষিণ কলকাতা থেকে ভােটে লড়েছি। ২০১১ সালেও উপনির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি। ২০২১ সালেও হয়তাে এটাই হওয়ার ছিল।
মমতা বলেন, ৩০ তারিখ সরকারি ছুটি। বৃষ্টি হলেও ওই দিনটায় কষ্ট করে ভােটটা দিতে যান সকলে। যদি আপনারা চান, আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকি, তাহলে সবাই মিলে ভােটটা দিন।
এদিন চত্ৰবেড়িয়া প্রচার সভায় যাওয়ার আগে ভবানীপুর জৈন মন্দিরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথা মেনে সেখানে পুজো দেন, আরতি কন্মে, জৈন গুরুদের সঙ্গে দেখা করে আশীর্বাদ নেন। জৈন মন্দিরে মমতার সঙ্গে ছিলেন সুব্রত বক্সি, দেবাশিস কুমার প্রমুখ।