• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বাংলা এখন বিশ্ববাংলা হয়ে গিয়েছে: মমতা

বাঘাযতীনে পুরভোটের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন বাংলা বিশ্ববাংলা হয়ে গিয়েছে। ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ সম্মান দিয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo:SNS)

রাজনীতির ময়দানে দুর্গাপুজো ইস্যুতে ‘রণং দেহি’ হয়ে উঠল কেন্দ্র ও রাজ্য। বাংলার দুর্গাপুজোর মাথায় ইউনেস্কোর মুকুট ওঠার পরে মোদি-শাহকে বিধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যদিকে বাংলার এই সম্মানকে হিন্দুত্বের অলংকারে ভূষিত করে দেশের সম্মান হিসেবে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির।

বাংলার এই সম্মানকে দেশের গর্ব বলে দাবি করে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। বুধবারই দুর্গাপুজোর বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতি পাওয়ার সংবাদ আসার পরেই টুইট করেছিলেন তৃণমুল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অমিত শাহ এবং বিজেপির নেতাদের দু মিনিট নীরবতা পালন করতে বলেছিলেন।

বৃহস্পতিবার বাঘাযতীনে পুরভোটের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন বাংলা বিশ্ববাংলা হয়ে গিয়েছে। ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ সম্মান দিয়েছে।

আবার কেউ কেউ বাংলায় এসে বলত, মমতাজি বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেয় না এখন ওদের মুখে চুনকালি পড়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা এখন বিশ্ববাংলা হয়ে গিয়েছে। বাংলার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। এর চেয়ে বড় সম্মান আর কিছু নেই।

এই কথা বলার সময়ে আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে আপনাদেরও নিশ্চয়ই দিচ্ছে। আমি এমনি এমনি ক্লাবগুলোকে পুজোর সময়ে ৫০ হাজার করে টাকা দিই না ২০১৬ সাল থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম এর জন্যই কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছে আজ আমি গর্বিত।

বাংলাকে আমি বিশ্বসেরা করব এর জন্য যেখানে যেতে হয় যাব। প্রসঙ্গত বুধবার বাংলার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার সংবাদ আসার পরে তার কৃতিত্ব নিতে ময়দানে নেমেছিল বিজেপি।

১৩ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত ইন্টার গভর্নমেন্ট কমিটির ষোড়শ অধিবেশন ছিল। সেই অধিবেশনেই কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’র তালিকায় স্থান দেওয়া হয়।

এই স্বীকৃতি পাওয়ার খবর ইউনেস্কোর টুইটের পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সাফলাকে দেশের গর্ব হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও টুইট করে লিখেছিলেন, এই পুজো আসলে জাতীয় ঐক্যের পরম্পরার স্বীকৃতি।

বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর টুইট রি-টুইট করে লেখেন, সকল বাঙালি ও ভারতীয়র কাছে এ এক গর্বের দিন। এমনকী রাজ্য বিজেপির হেড কোয়ার্টার মুরলিধর সেন লেনের অফিসিয়ান টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও লিখে দেওয়া হয়েছিল, যা হয়েছে মোদিজির জন্যই হয়েছে।

এই উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীই নিয়েছিলেন। ইউনেস্কোতে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব না দিলে দুর্গাপুজোর এই স্বীকৃতি জুটত না। শেষে অবশ্য এই টুইট মুছে দেওয়া হয়। আসলে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে এই টুইটের পরে বিদ্রূপ করা শুরু হয়ে যায় সোস্যাল সাইটে।

কেউ লিখলেন, মোদির জন্যই মা দুর্গা ধন্য হলেন। বৃহস্পতিবার পুরভোটের প্রচারে কলকাতার উন্নয়নের প্রসঙ্গে রাজ্যজুড়ে নীল-সাদা রং প্রসঙ্গেও সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি যখন সৌন্দর্যায়নের জন্য শহরে নীল-সাদা রঙ করি, তখন ব্যঙ্গ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল রাজ্যকে আর্জেন্টিনা বানাবে। কিন্তু এখন দিল্লি, মুম্বই, কর্ণাটকে নীল সাদা রং হচ্ছে।

নীল কোনও দলীয় রং নয়। নীল রং আকাশের। আকাশের কোনও সীমা নেই। এখন গোটা দেশের অনুপ্রেরণা কলকাতা তথা বাংলা। এদিন কলকাতার উন্নয়ন নিয়েও একগুচ্ছ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বলেন, শহরের পুর পরিষেবার উন্নয়নে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ এবং মেট্রোরেলের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতির প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। আদি গঙ্গার ড্রেজিং এবং টালি নালার সংস্কারের জন্য সরকারের পরিকল্পনার কথাও বলেন।

সব মিলিয়ে কেবল বিশ্বের মঞ্চেই স্থান পাওয়াই নয়, উন্নয়নের নিরিখে দেশের অন্য রাজ্যের তুলনায়ও যে ‘এগিয়ে বাংলা’ সেই কথাই প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।