• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

সাংবাদিকদের পেশাগত সুরক্ষায় রাজ্য বিল আনছে

সাংবাদিকদের পেশাগত সুরক্ষায় বিধানসভায় আসতে চলেছে বিল।

মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের পঁচাত্তর বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

সাংবাদিকদের পেশাগত সুরক্ষায় বিধানসভায় আসতে চলেছে বিল। মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের পঁচাত্তর বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে এসে এই ঘােষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এজন্য প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে একটা টেকনিক্যাল কমিটি তৈরি করা হবে। কমিটির মাধ্যমে দেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতেই সাংবাদিকদের পেশার সুরক্ষা আইনগত বৈধতা পাবে।

প্রেস ক্লাবের পঁচাত্তর বছর পূর্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাংবাদিকদের আবাসন, প্রেস ক্লাবের বিল্ডিং-এর জন্য জমির দেওয়ার কথাও ঘােষণা করেন। সেইসঙ্গে ৬৯ জন সাংবাদিককে সরকারি পেনশন দেওয়া হয় এদিন।

প্রসঙ্গত, মাঝেমধ্যে সাংবাদিকদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরদিনই তাঁদের পক্ষেই রয়েছেন সহযােগিতার আশ্বাস নিয়ে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ই সাংবাদিক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের অর্ধেক ভাড়ায় রেলভ্রমণের ছাড় দেওয়ার প্রকল্প চালু করেন।

এরপর সরকারি কর্মচারীদের মতাে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার মাভৈঃ প্রকল্পও বর্তমান সরকারের অনুদান। এবার পেশাগত সুরক্ষার প্রশ্নেও সাংবাদিকদের পক্ষ নিলেন মমতা। উপযুক্ত কারণ ছাড়াই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে কর্মীদের ব্রখাস্ত করা কিংবা বিভিন্ন স্বল্পস্থায়ী সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের চাকরি চলে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা।

এই বিষয়ে বিল এনে সাংবাদিকদের পেশাগত সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান তিনি। এমনকী প্রেস ক্লাবের সংবিধানে সংশােধনী এনে চিত্র সাংবাদিকদেরও প্রেস ক্লাবে সদস্যপদ দেওয়ার জন্য অনুরােধ রাখেন। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের পেশার প্রতি দায়িত্বশীল এবং বিশ্বাসযােগ্য থাকার কথাও বলেন মমতা।

তাঁর বক্তব্য, ইদানিং বেশ কিছু ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। একসময় সাংবাদিকদের অকুস্থলে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করা বাধ্যবাধকতা ছিল। তথ্য যাচাই না করে কোনও সংবাদ সাধারণত পরিবেশিত হত না। কিন্তু বর্তমানে ফেসবুক, টুইটার, সােস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সৌজন্যে সংবাদ ঘরে বসেই সংগ্রহ করা হচ্ছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টা অনেকটা বাড়িতে রান্না করে ঘরােয়া রেডিমেড় খাবার বাইরে থেকে এনে খাওয়ার মতাে। তাতে ঘরের রান্নার স্বাদ পাওয়া গেলেও, আন্তরিকতার আস্বাদ মেলে না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যে প্রযুক্তির হাত আমাদের ধরতেই হয়, সেকথাও মেনে নিয়েছেন মমতা। ঠিক যেভাবে কলম না ধরে এখন কম্পিউটারেই লিখতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে সবাই।

প্রেস ক্লাবের পঁচাত্তর বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে এসে মমতা যেন প্রশাসনিক খােলসের বাইরে পা রাখলেন। এদিন মমতাকে সদস্যপদের একটি কার্ড দেওয়া হয়। যে কার্ডটিকে তিনি সযত্নে নিজের কাছে রাখবেন বলে জানান।

সাংবাদিকদের সঙ্গে রাজনীতিকদের একটা অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক থাকে। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক বহুদিনের। এই ক্লাবের তিনি মাননীয় সদস্যও। সদস্যপদের জন্য তিনি তাঁর ব্যক্তিগত পুঁজি থেকে এক লক্ষ টাকার চেক দেওয়ার কথা জানালেন। যে টাকা থেকে দুর্ঘটনাগ্রত সাংবাদিকদের অর্থ সাহায্য করা হবে।

এছাড়া রুবির পেছনে সাড়ে তিন কাঠা জমিতে প্রেস ক্লাবের বিল্ডিং তৈরি এবং রাজারহাটে সাংবাদিকদের কো অপারেটিভ আবাসনের জন্য জমি পুর ও নগরােন্নয়ন দফতর থেকে দেওয়ার কথা ঘােষণা করেন মমতা।

প্রেস ক্লাবের পঁচাত্তর বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে প্রেস ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।