কলকাতা শহরে ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। কখনও বাঘাযতীন, ট্যাংরা, বাগুইআটি, আবার কখনও তপসিয়া- শহরের বিভিন্ন জায়গায় এমন সমস্যার খবর বারবার সামনে আসছে। জলাশয় ভরাট করে নির্মাণ থেকে শুরু করে নিয়মবহির্ভূত উচ্চতার বাড়ি নির্মাণ, সবকিছুই এই বিপর্যয়ের কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে বার্তা দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
মেয়র জানিয়েছেন, কোনও প্রমোটরের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনার আগে রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি (রেরা)-তে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে কিনা তা অবশ্যই যাচাই করা প্রয়োজন। রেরা-তে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনও প্রমোটরের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনা বেআইনি। প্রমোটররা বেআইনি ভাবে নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বিক্রি করলে এবং ক্রেতারা সেই ফ্ল্যাট কিনলে উভয়কেই আইনি জটিলতায় পড়তে হতে পারে।
তিনি বলেন, কলকাতা কর্পোরেশনের রেকর্ডে সেই ফ্ল্যাটবাড়ি নথিভুক্ত রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত। প্ল্যান অনুমোদিত না হলে সংশ্লিষ্ট নাগরিকরা পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হতে পারবেন।
পুরসভা বর্তমানে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে শহরের সমস্ত নির্মাণকাজে নজরদারি চালাচ্ছে। মেয়রের দাবি, বেআইনি বাড়ি নির্মাণ এখন প্রায় বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। জলাশয় ভরাট করে নির্মাণেরও সুযোগ নেই। পুরসভার কাছে জলাশয়ের সম্পূর্ণ তালিকা রয়েছে, যা থানাগুলিতে পাঠানো হয়েছে। এদিন মেয়র বলেন, ‘কোনও এলাকায় জলাশয় ভরাটের ঘটনা ঘটলে তা তৎক্ষণাৎ পুরসভাকে জানান।’
মেয়র আরও জানিয়েছেন, ১৫ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার কোনও বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সয়েল টেস্ট রিপোর্ট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। নির্মাণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ইঞ্জিনিয়ারদের আরও সাবধানতার সঙ্গে দায়িত্ব নেওয়ার প্রয়োজন, কারণ নির্মাণে কোনও অনিয়ম হলে তাদের লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে।
নাগরিকদের সতর্ক করে মেয়র বলেন, ‘নিজের কষ্টের টাকা দিয়ে বেআইনি নির্মাণ কিনবেন না। কেনার আগে সব দিক যাচাই করে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।’