নাবালিকা ছাত্রীকে ‘নির্যাতন’, হত্যার ‘হুমকি’! জালে গৃহশিক্ষক

আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ফের ধর্ষণের অভিযোগ। বারুইপুরের রেল কোয়ার্টারে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় পুলিশের জালে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ।

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, মিছিল চলছে দেশজুড়ে। বিক্ষোভের আঁচ পৌঁছেছে বিদেশেও। তারপরেও ধর্ষণে ইতি নেই। শেষ নেই নারী নির্যাতনের। এই মানসিক ব্যাধিকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলা আদৌ সম্ভব কিনা তা কারও জানা নেই। কিন্তু প্রায়শই ধর্ষণের ঘটনায় সমাজে আতঙ্ক ক্রমশই বাড়াচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, কবে নিশ্চিত হবে নারী এবং শিশুদের নিরাপত্তা? বারুইপুরে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা আবারও যেন সেই প্রশ্নই তুলে দিল।

জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বিশ্বনাথ সর্দার দীর্ঘদিন ধরেই বারুইপুরের রেল কোয়ার্টারে থাকতেন। পেশায় রেল কর্মী হলেও অবসর সময় কাটাতেন গৃহশিক্ষকতা করে। পড়ার সুবাদে বহু পড়ুয়ার আনাগোনা ছিল তাঁর কোয়ার্টারে। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির একাধিক পড়ুয়া তাঁর কাছে পড়তে আসত। বারুইপুরের ওই রেল কোয়ার্টারে টিউশন পড়ত অষ্টম শ্রেণির নির্যাতিতা নাবালিকাও।


অভিযোগ ওঠে, পড়ানোর অছিলায় প্রায়শই ওই নাবালিকার গায়ে হাত দিতেন বিশ্বনাথ সর্দার। এমনকি বাকি পড়ুয়ারা চলে গেলে নাবালিকাকে ঘরে আটকে একাধিকবার ধর্ষণও করা হয়। এখানেই শেষ নয়, ধর্ষণের কথা কাউকে বলে দিলে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। মা-বাবাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন ওই গৃহশিক্ষক।

নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে খবর, লাগাতার এই ঘটনার জেরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে নির্যাতিতা। দীর্ঘদিন ধরেই মনমরা হয়ে ছিল সে। ভয়ে-আতঙ্কে কাউকে এ বিষয়ে কিছু বলতেও পারত না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় কাউন্সেলিংয়ের জন্য নির্যাতিতাকে মনোবিদের কাছে নিয়ে যান তার বাবা-মা। বেশ কয়েকদিন কাউন্সেলিংয়ের পর অবশেষে মুখ খোলে নির্যাতিতা নাবালিকা। ভয় কাটিয়ে মাকে ধর্ষণের বিষয়ে সব কথা খুলে বলে সে।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বারুইপুর থানার দ্বারস্থ হন নির্যাতিতার মা-বাবা। গৃহশিক্ষক বিশ্বনাথ সর্দারের বিরুদ্ধে দায়ের করেন লিখিত অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বনাথকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের মেয়ে ছাড়াও কোচিং সেন্টারেও আরও অনেক নাবালিকা ছাত্রীর সঙ্গে এহেন ব্যবহার করতেন ওই গৃহশিক্ষক। এই অভিযোগও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আর কে কে অভিযুক্তের নির্যাতনের শিকার তা খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে বারুইপুর থানার পুলিশ।