ডিভিসি’র ছাড়া জলে বানভাসি বাংলা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্গত মানুষজনকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা সমাধানে প্রশাসনিক উদ্যোগ জারি রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলা সফর করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাশাপাশি ১০ জন শীর্ষ আধিকারিককে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ১০টি জেলায় পাঠিয়েছেন প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। পুজোর মুখে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি। কৃষকদের দুর্দশা বেড়ে গিয়েছে বহুগুণ। এমতাবস্থায় তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কৃষি দপ্তরকে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বানভাসি এলাকায় কৃষিজমি এবং ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুক্রবার নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং দপ্তরের প্রধান সচিব ওঙ্কার সিং মিনা। দীর্ঘ ২ ঘণ্টার এই বৈঠকে কৃষি দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
বানভাসি জেলা ধরে ধরে দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার জন্য জেলায় জেলায় থাকা কৃষিদপ্তরের আধিকারিকদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলস্তর থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করে সেই রিপোর্ট নবান্নে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর এখনও নামেনি। সেই কারণে কিছুটা সময় লাগবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেতে। তবে প্রাথমিক হিসেবে ২ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের শস্য বিমার আওতায় আনার। যাঁরা এখনও শস্যবিমায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেননি, তাঁদেরকেও এর আওতায় আনা হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এর ফলে কিছুটা হলেও সুরাহা পাবেন কৃষকরা।’
জেলার কৃষি আধিকারিকদের কাছে একগুচ্ছ নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট উ্ল্লেখ করা হয়েছে, কৃষকদের পাশে মানবিক মুখ নিয়ে দাঁড়াতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সে কারণে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে ফটো এবং ভিডিওগ্রাফি প্রমাণ হিসেবে আধিকারিকদের সংগ্রহ করতে হবে এবং এই তথ্য জেলাস্তরে মনিটরিং কমিটির কাছে থাকবে। জলস্তর নামার পর কৃষকরা যাতে পুনরায় কৃষিকাজ শুরু করতে পারে, তার জন্য ধান বা অন্যান্য শস্যবীজের বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। ব্লকস্তর থেকে পাওয়া তথ্য জমা দিতে হবে জেলার কৃষি দপ্তরে। সেখান থেকে রিপোর্ট পাঠাতে হবে নবান্নে।