রাজ্য সরকারের বঙ্গবিভূষণ সম্মান দেওয়ার প্রস্তাবে সাড়া দেননি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর সাড়া না মেলায় নীরবতাকেই অসম্মতি বলে ধরে নিয়েছিল রাজ্য সরকার।
তবে, শুক্রবার সিপিএমের দেওয়া পুরস্কার গ্রহণ করলেন এই নোবেলজয়ী।
সশরীরে উপস্থিত থেকে অমর্ত্য সেন এই পুরস্কার গ্রহণ না করলেও তাঁর হয়ে প্রতীচী ট্রাস্টের ডিরেক্টর মানবী মজুমদারের পুরস্কার গ্রহণ করার কথা।
ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম পুরোধা মুজফ্ফর আহমেদের জন্মদিন শুক্রবার।
প্রতিবছর মুজাফ্ফর আহমেদ ট্রাস্ট স্মৃতি বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে।দীর্ঘদিন এই ট্রাস্টের সভাপতি ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
অমর্ত্য সেনের লেখা ‘হোম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড আ মেমোয়ার’ বইটির জন্য সম্মানিত করা হয় এই নোবেলজয়ীকে।
রাজ্য সরকারের দেওয়া বঙ্গ সম্মান মঞ্চে উপস্থিত থেকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু অমর্ত্য সেনের তরফে সেদিন কোনও সাড়া মেলেনি।
রাজ্য সরকারের দেওয়া সম্মান গ্রহণে অমর্ত্য সেন সাড়া না দিয়ে সিপিএমের দেওয়া সম্মান গ্রহণের নেপথ্যে কৌশলী মনোভাব গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সিপিএম অমর্ত্য সেনকে বিশেষ সম্মান দিয়ে কৌশলে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এর মাধ্যমে সিপিএম বোঝাতে চাইছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া সম্মানে অমর্ত্য সেন সাড়া না দিলেও সিপিএমের দেওয়া সম্মান গ্রহণ করেছে।
আর এই নিয়েই অমর্ত্য সেনকে কটাক্ষ করলেন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলের কথায়, অমর্ত্য সেন তো একজন পর্যটক।
একটি রাজনৈতিক রঙের বাইরে বেরোতে পারেননি। অমর্ত্য সেন বামপন্থী সমর্থক বলে পরিচিত।
বিজেপি সরকারের বিরোধিতায় তিনি বিভিন্ন সময়ে কলম ধরেছেন। সমালোচনায় মুখরও হয়েছেন।
এর জন্য বিভিন্ন সময়ে শুধু বঙ্গবিজেপির নেতারাই নন, জাতীয় স্তরের বিজেপি নেতারা অমর্ত্য সেনকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন।
বর্তমান রাজ্য সরকারের সঙ্গে অমর্ত্য সেনের সুসম্পর্ক থাকলেও তিনি দুরত্ব বজায় রেখে চলতে ভালবাসেন।
তৃণমূল এবং বিজেপির থেকে সমদুরত্ব রেখে চলতে চাওয়া এই মানুষটি নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ মেনে চলেছেন বরাবর।
হয়তো সে কারণেই সিপিএমের ডাকে তিনি সাড়া দিলেও রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে নীরব থেকেছেন।
এমনই এক আবহে বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা সদ্য মন্ত্রী হওয়া বাবুল সুপ্রিয় একটু অন্যভাবে অমর্ত্য সেনের সমালোচনা করেছেন।
বাবুলের কথায়, ‘উনি একটি নির্দিষ্ট পথে রাজনীতি করেন, যার সঙ্গে আমাদের রাজনীতির কোনও মিল নেই। উনি ওঁর মতো ভাবেন, কাজ করেন। সেসব নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে উনি তো পর্যটক।
এত বড় অর্থনীতিবিদ হওয়ার পরও বারবার বুঝিয়ে দেন যে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক রঙের বাইরে বেরোতে পারেননি।’