করােনা আবহের মধ্যে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার জন্য এই প্রথম বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাকে ‘সচেতন এবং ইতিবাচক’ পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন সকলেই।
দলের এক শীর্ষনেতার কথায়, “দিদি প্রতিবারই খুব আন্তরিকতা নিয়ে ভাইফোঁটা দেন। কিন্তু এ বার করােনার জন্য সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক, তাই সচেতনতা থেকেই দিদি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানি এতে দিদি ও খারাপ লেগেছে। পাশাপাশি মন খারাপ হচ্ছে আমাদেরও। কিন্তু এই কঠিন সময়ে এই সচেতনটা না দেখালেও নয়। দিদি সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
তবে সামনে বসে ভাইফোঁটা না দিলেও যাঁদের তিনি নিয়ম করে প্রতিবার ফোঁটা দেন, তাঁদের সকলের বাড়িতে সােমবার, ভাইফোঁটার দিন পৌঁছেছে মমতার উপহার। সকলকেই তিনি নিজে ফোন করে জানিয়েছে, এ বার সময়টা অন্যরকম’ বাধ্য হয়েই তাই এ বার ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করতে হচ্ছে।
যিনি প্রতিবার ভাইফোঁটা নেন, সেই এক নেতা সােমবার দুপুরে বললেন, “গত চার পাঁচদিন ধরেই শুনছিলাম, এবার দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটা হবে না। কথাটা শুনে একটু মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভেবে দেখেছিলাম, এই পরিস্থিতিতে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। তার পর সকালেই উনি ফোন করলেন। তার পর দেখলাম, ওঁর ভাইফোঁটার প্রীতি উপহারও আমার বাড়িতে চলে এসেছে। উপহার পেয়ে ফোনেই আশীর্বাদ চেয়ে নিলাম।
আশা করি, আগামী বছর এই পরিস্থিতি কেটে যাবে। তখন নিশ্চয়ই আবার সামনে বসে ওঁর হাত থেকে কপালে ফোঁটা নিতে পারব । ভাইফোঁটা বাতিল করার আগে এবছর করােনা আবহের কারণে কালীপুজোর আমন্ত্রণও সঙ্কুচিত করতে বাধ্য হয়েছেন মমতা। অন্যান্যবার কালীপুজোর দিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে যে জনসমাগম দেখা যায়, এ বার তার দেখা মেলেনি।
করােনা আবহে তা হওয়ার কথাও ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সচেতনতা দেখিয়ে এ বার কালীপুজোয় অতিথিদের আমন্ত্রণে রাশ টেনেছিলেন। অতিথির ভিড় না থাকলেও পুজো অবশ্য হয়েছে নিয়মবিধি মেনেই। যেমন ভাইফোঁটা না হলেও মমতার ফোন এবং উপহার সকালেই পৌঁছে গিয়েছে ভাইদের হাতে।
প্রসঙ্গত, করােনা আবহে সামাজিক দূরত্ব মেনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়ির ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ কিন্তু দিব্যি অন্যান্যবারের মতােই ভাইফোঁটা নিয়েছেন।