কথা দিয়েছিলেন। সেই কথা মতো বছর শেষ হওয়ার আগেই সন্দেশখালিতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা জানান, আগামী ৩০ ডিসেম্বর সন্দেশখালিতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন তিনি।
ওই দিন দুপুর একটায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে। এই অনুষ্ঠান থেকে মমতা প্রায় ২০ হাজার মানুষের হাতে সরকারি পরিষেবা তুলে দেবেন। মমতার কথায়, ‘নির্বাচনের আগে অনেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, দিদি আপনি সন্দেশখালি গেলেন না? আমি বলেছিলাম, পরে যাব। আগামী ৩০ ডিসেম্বর বেলা একটায় সরকারি ডিস্ট্রিবিউশন কর্মসূচিতে সন্দেশখালি যাব। সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আমি মঞ্চ থেকে ১০০ জনের হাতে পরিষেবা পৌঁছে দেব। তবে সেদিন আলাদা আলাদা ক্যাম্প থেকে অন্তত ২০ হাজার মানুষের হাতে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। এরপর থেকেই শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। জোর করে জমি দখল থেকে শুরু করে মহিলাদের উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে সেই সময়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। এই কাণ্ডে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে উঠেছিল। নির্বাচনের আগে এই ইস্যুতে সরব হন বিরোধীরা। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে পথে নামে বিজেপি। সন্দেশখালি কাণ্ডের জেরে অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সময় মমতা জানিয়েছিলেন, নির্বাচনে জিতলে তিনি সন্দেশখালিতে যাবেন। সেই কথামতো বছর শেষ হওয়ার আগেই সন্দেশখালিতে যাচ্ছেন মমতা। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালি কাণ্ডের ছায়া পড়বে বলে দাবি করেছিল বিজেপি সহ বিরোধীরা। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল সামনে এলে দেখা যায়, সন্দেশখালি যে লোকসভা আসনের অন্তর্গত সেই আসনে বিপুল ভোট জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস।
নবান্নের সভাঘর থেকে মমতা আরও জানান, আগামী ৬ জানুয়ারি তিনি গঙ্গাসাগর মেলা পরিদর্শনে যাবেন। ৭ তারিখে ফিরে আসবেন কলকাতায়। ৮ তারিখ তিনি বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধন করবেন। সেই দিনই বাবুঘাট থেকে পরিবহনের জন্য একটি ই–ভেসেল উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ভেসেলটি হাওড়া থেকে বেলুড়মঠ, দক্ষিণেশ্বর যাতায়াত করবে বলে জানা গিয়েছে। আগামী বছরের ২ জানুয়ারি দুপুর ১টায় নবান্নের সভাঘরে দপ্তরগুলিকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসতে চলেছেন মমতা। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান তিনি। এই বৈঠকেই নতুন বছরে সরকারের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আগামী ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস। ওই দিন ‘মা মাটি মানুষ দিবস’ হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করেন মমতা। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে ব্লকে ব্লকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে।