• facebook
  • twitter
Thursday, 26 December, 2024

ধৃত মোক্তার জাল পাসপোর্ট তৈরির বড় মাথা, পরিচয়পত্রে বদলে যেত অনুপ্রবেশকারীদের ধর্ম

সমরেশ ও মোক্তার জাল পরিচয়পত্র তৈরির একই চক্রের সঙ্গে জড়িত হলেও মোক্তার অনেক বড় মাপের অপরাধী। সে নিজের মতো করে আলাদাভাবে বিভিন্ন জালিয়াতির কারবার চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

ফাইল চিত্র

জাল পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে সিদ্ধহস্ত সমরেশ বিশ্বাস ও দীপক মণ্ডলকে পূর্বেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দত্তপুকুর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মোক্তার আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার কাছ থেকে আরও বহু অজানা তথ্য মিলতে পারে বলে ধারনা তদন্তকারীদের। সেজন্য তদন্তকারীরা তার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য অনুসন্ধান শুরু করেছে। সেই তথ্যগুলি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।

এদিকে পাসপোর্ট জালিয়াতির তদন্তে আরও তথ‍্য অনুসন্ধানে মরিয়া কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ইতিমধ্যে সমরেশের নেটওয়ার্কের এক চক্রীকে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে রাজ্য গোয়েন্দারা। জেরা করা হয়েছে আমতা পোস্ট অফিসের অস্থায়ী কর্মীকেও। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, আমতা পোস্ট অফিসে আসত ভুয়ো পাসপোর্ট। সেই পাসপোর্ট সমরেশ ও তাঁর এজেন্টদের হাতে সরাসরি তুলে দিত ওই অস্থায়ী কর্মী।

পুলিশ দাবি করেছে, সমরেশ ও মোক্তার জাল পরিচয়পত্র তৈরির একই চক্রের সঙ্গে জড়িত হলেও মোক্তার অনেক বড় মাপের অপরাধী। সে নিজের মতো করে আলাদাভাবে বিভিন্ন জালিয়াতির কারবার চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এজন্য সে নিজস্ব একটি নেটওয়ার্ক বিস্তার করে। সেই নেটওয়ার্কে রয়েছে এজেন্ট এবং সাব এজেন্ট। এইসব এজেন্ট এবং সাব এজেন্টরা বাংলাদেশ থেকে লোক পাচারের কাজ করতো। মুক্তারের কাছ থেকে যেসব অনুপ্রবেশকারী ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করে নিতো, তাদের একটি প্যাকেজ সিস্টেমে কাজ করে দিত সে।

তদন্তে জানা গিয়েছে, অনুপ্রবেশকারীরা যোগাযোগ করার পর অগ্রিম বুকিং করলেই দ্রুত তার টিমের কাজ শুরু হয়ে যেত। আগে থেকেই পরিচয়পত্র তৈরির বিভিন্ন ফরম্যাট রেডি করা থাকতো। তৈরি করা থাকতো ভুয়ো পরিচয়পত্রের তালিকাও। সেই তালিকা অনুযায়ী নতুন অনুপ্রবেশকারীদের নাম বসিয়ে দেওয়া হতো। জাল পরিচয়পত্রে বদলে যেত আবেদনকারীর নাম, বাবা-মায়ের নাম, এমনকি ধর্ম। সেই পরিচয়পত্র নিয়ে বাংলাদেশ থাকা অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে বসবাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতো। এমনকি ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে ভিন রাজ্যে চলে যেত অনেকে।

মুক্তারের নেটওয়ার্ক অন্য রাজ্যেও সক্রিয় ছিল বলে সূত্রের খবর। তদন্তকারীদের মধ্যে সেই আশঙ্কা জোরালো হয়েছে। এর আগে ভুয়ো নথি তৈরির অভিযোগে ২০২১ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। পরে সে জামিনে মুক্ত হলেও অপরাধ প্রবণতা কিছুই কমেনি। বরং তার নেটওয়ার্ক আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। বাড়ে পরিমাণ।