বাড়িতে নিত্যপুজোর পাশাপাশি বিভিন্ন পীঠস্থানে গিয়ে দেবদেবীর চরণে পুজো দেওয়া থেকে শুরু করে, জেলার পাথরচাপুরি মাজারে গিয়ে নিয়মিত চাদর চাপাতেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যে কোনও নির্বাচনে দলের জয় এবং রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগেও তিনি মন্দির এবং মাজারে গিয়ে দলের প্রার্থীদের এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চেয়ে পুজোও দিতেন। অনুব্রত মণ্ডলের প্রস্তাব মেনে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কঙ্কালীতলা, লাভপুরের ফুল্লরা মন্দির, তারাপীঠের মা তারার মন্দির, বক্রেশ্বর ধাম থেকে শুরু করে পাথরচাপুরির দাতাবাবার মাজার সংস্কার ও উন্নয়নে প্রভূত কাজ করে দিয়েছেন। কঙ্কালীতলায় অনুব্রত মণ্ডলের ব্যবস্থাপনায় কাশীর পণ্ডিতদের দিয়ে ঘি ও বেলকাঠের হোমযজ্ঞ এক সময় আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল।
তিহাড় জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর একমাত্র মাতৃহীন কন্যা সুকন্যা ওরফে রুবাই ২৪ সেপ্টেম্বর বোলপুরের বাড়িতে ফেরার পর থেকে বড্ড ক্লান্ত ছিলেন পিতা-পুত্রী। তারই মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কিছু সময়ের জন্য তিনি বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে যেমন আসছেন তেমনি, নানুরের হাটসেরান্দিতে নিজের পৈতৃক বাড়িতে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে দুর্গাপুজোর প্রতিমা তৈরীর তদারকিও করছেন। তবে, তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যাঁদের সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক তাঁদের সঙ্গে তিনি সম্পর্ক রাখতে চান না। এবার তাঁর আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তিনি গ্রামের বাড়ির পুজোতে অতীতের মতো বিরাট আয়োজন করতে পারবেন না। গ্রামের গরীব মানুষদের নিয়েই তিনি থাকবেন।
কিন্তু দেবদেবীর ভক্ত অনুব্রত মণ্ডল রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর মেয়ে ও মেয়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীকে নিয়ে হাটসেরান্দি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দুর্গাপুজোর তদারকি করে চলে আসেন কঙ্কালীতলায়। এখানে তিনি মেয়ে ও মেয়ের বান্ধবীকে নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করে পুজোও দেন। অনুব্রত মণ্ডলের জনপ্রিয়তায় যে একটুও ভাটা পড়েনি তা এদিন কঙ্কালীতলায় অনুব্রত মণ্ডলকে চাক্ষুষ করতে মানুষের যে ঢল নেমেছিলো তা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এদিন তিনি মা কঙ্কালীর চরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পুজো দিয়ে জানান, তিনি কঙ্কালীতলাকে যে ভাবে সাজিয়ে দিয়েছিলেন, এখনও সেই অবস্থাতেই রয়ে গিয়েছে। কঙ্কালীতলার আরও উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে।
এবার বর্ষায় কঙ্কালী মন্দিরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কোপাবতী বা কোপাই নদীর জলে ডুবে গিয়েছিলো কঙ্কালী মন্দির চত্ত্বর। এদিন অনুব্রত মণ্ডল জানিয়ে দেন যে, দীপাবলির পরেই তিনি কঙ্কালীতলার আরও উন্নতিসাধনের কাজ করে দেবেন। আর তাঁর মুখ থেকে এই প্রতিশ্রুতি উচ্চারিত হতেই উপস্থিত জনতা ও সাধু সন্তদের অনুব্রত মণ্ডল এবং মা কঙ্কালীর জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা কঙ্কালীতলা। সেইসাথে অনুব্রত মণ্ডল এদিন জানিয়ে দেন যে, তিনি জেলার সমস্ত তীর্থক্ষেত্র এবং মাজার পরিদর্শন করে, যেখানে যে কাজ বাকি আছে তা তিনি করে দেবেন।