গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা উপড়ে ফেলে একসঙ্গে লড়ার বার্তা দিলেন অনুব্রত

রণকৌশল বদলালেন অনুব্রত। একদিকে অনেকেরই প্রত্যাশা পূরণ না হলেও,  চেনা ছন্দের বাইরে অন্যভাবে পাওয়া গেল তিহাড় জেল ফেরৎ  বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। গোরুপাচার মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের  হাতে ২০২২ সালের ১১ আগস্ট গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।  গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও।  তাঁদের ঠাঁই হয়েছিলো দিল্লির তিহাড় জেলে। জামিনে ছাড়া পেয়ে অনুব্রত মণ্ডল মেয়ে সুকন্যাকে নিয়ে  ২৪ সেপ্টেম্বর  তাঁদের বোলপুরের বাড়িতে ফিরে আসেন।  তারপর থেকেই অনুব্রত মণ্ডল বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে এলেও, প্রকাশ্য দলীয় কোনও কর্মসূচিতে যোগ দেননি।  তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, লক্ষ্মীপুজোর পরদিন থেকে তিনি বিজয়া সম্মিলনীর  মধ্যে দিয়ে জেলার ব্লকে ব্লকে  ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত গিয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হবেন।

সেই কর্মসূচিই  লক্ষ্মীপুজোর পরদিন বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর মুরারই-১ ব্লকের  মুরারইয়ের গোরুর হাটের মাঠ থেকে শুরু করলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের অপর নেতা সুদীপ্ত ঘোষ। তিহাড় জেল ফেরৎ অনুব্রত মণ্ডলের এদিনের প্রকাশ্য সভা ঘিরে দলীয় কর্মীদের উন্মাদনা ছিলো চোখে পড়ার মতো।  মঞ্চে অনুব্রত মণ্ডলকে পুষ্প স্তবক ও গলায় শাল  জড়িয়ে বরণ করা হয়।  দলীয় কর্মীদের অনেকের মধ্যেই প্রত্যাশা ছিলো যে, অনুব্রত মণ্ডল ওরফে তাঁদের কেষ্টদার বক্তব্যে হয়তো তাঁকে পুরনো ছন্দে চোখা চোখা বক্তব্যের মধ্যে পাওয়া যাবে। কিন্তু এদিন অনুব্রত মণ্ডলকে পাওয়া গেল এক্কেবারে পরিবর্তিত মানুষ হিসেবে। তিনি দলীয় কর্মীদের কাছে শান্ত গলাতেই  দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা উপড়ে ফেলে সকলকে একসঙ্গে  কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি স্পষ্টভাবেই বলেন,  আমরা কেউ নেতা নই, আমরা সবাই দলের কর্মী।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে কাজ করুন। মানুষের পাশে ও উন্নয়নের সাথে থাকুন। মারামারি, ঝগড়াঝাঁটি  করবেন না।  এতে ভালো কোনও বার্তা যায় না। সেইসাথে তিনি জানান, কী হবে  ঝগড়াঝাঁটি  করে, আর কার জন্যই বা করবেন? এসবের কোনও দরকার নেই। সেইসঙ্গে তিনি সামনের বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে বলেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা উপড়ে ফেলে একসঙ্গে সকলকে লড়াই করতে হবে। তিনি মঞ্চের সামনের মহিলাদের উদ্দেশ্যে  বলেন, মা-বোনেরা, আগামী রাজ্য বিধানসভা ভোটে আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’হাত ভরে ভোট দিন।