মহারাষ্ট্রে ফের নৃশংসভাবে খুন বাংলার আরও এক পরিযায়ী শ্রমিক

ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। কয়েকদিন আগে মালদহের এক পরিযায়ী শ্রমিককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তার সহকর্মীর বিরুদ্ধে। এবার বীরভূমের নলহাটির এক পরিযায়ী শ্রমিকও খুন হলেন মহারাষ্ট্রে। জানা গিয়েছে, ওই শ্রমিককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। তাঁর দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

সোমবার রাতেই এই ঘটনার কথা পরিবারকে জানায় মহারাষ্ট্র পুলিশ। খুবই হতদরিদ্র ওই পরিবার। অভাবের সংসার চালাতে শ্রমিকের কাজে মহারাষ্ট্রে পাড়ি দিয়েছিলেন ওই যুবক। ঘটনাটি জানার পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এরকম এক বিপদের খবর পেয়েও ছেলের মৃতদেহ নিয়ে আসার মতো ন্যূনতম অর্থ নেই পরিবারের কাছে। অবশেষে গ্রামবাসীরা তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। তাঁরা চাঁদা তুলে মৃতের ভাইকে মহারাষ্ট্রে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন। মৃতদেহ আনতে আজ রাতেই রওনা হবেন মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের ভাই।

উল্লেখ্য, এর আগে গত রবিবার খুন হন মালদহের পরিযায়ী শ্রমিক আব্দুর রহমান। মালদহের কালিয়াচকের ওই শ্রমিকের বয়স সাঁইত্রিশ বছর। মুম্বইয়ের কালিয়ান এলাকায় সহকর্মীর হাতে খুন হন তিনি। ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁকে হাতুড়ির আঘাতে খুন করে এক সহকর্মী। হাতুড়ির আঘাতে নৃশংসভাবে খুন করে পালিয়ে যায় শেখ রোস্তম নামের ওই দুষ্কৃতী। যদিও সে পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। মুম্বইয়ের একটি রেলস্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার পর মৃতের এক সহকর্মী মৃতের পরিবারকে এই খুনের ঘটনার কথা জানান। মুহূর্তে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় রোস্তমপাড়া সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন মাস আগে মুম্বইয়ের কালিয়ানে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়েছিলেন আব্দুর রহমান।


এই দ্বিতীয় ঘটনার কয়েকদিন আগেও রাজস্থানের জয়পুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। মালদহের মতি আলী নামে অন্য এক পরিযায়ী শ্রমিক খুন হন জয়পুরে। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুরের ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের মিসকিনপুরের বাসিন্দা ছিলেন। মালদহে পরপর দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর পরেই ফের নলহাটির আর এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের মধ্যে কাজে গিয়েও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন না অন্যন্য পরিযায়ী শ্রমিকরাও। পরিবারগুলিও নতুন কোনও সদস্যকে ভিন রাজ্যে কাজে পাঠাতে ভীষণ ভয় পাচ্ছেন।