পয়লা জুলাই থেকে আগামী তিন মাস রাজ্যের ছয় হাজার বেসরকারি বাস-মিনিবাসকে ১৫ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার। বিনিময়ে তারা যত যাত্রী তত আসনের নিয়ম মেনে বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু করবে পুরনো ভাড়াতেই। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত শোনার পর থেকেই আপত্তি জানিয়েছিল বাস-মিনিবাস সংগঠন।
শনিবার ক্ষুব্ধ বাস মালিক সংগঠন সোজাসুজি জানিয়ে দিয়েছে মমতা সরকারের ভর্তুকির টাকা তারা নেবে না। এদিন বাস মালিক সংগঠনগুলি নিজেরা বৈঠক করেছিল। সেই বৈঠকে কলকাতার ৩১টি রুটের মধ্যে মাত্র একটি রুটের সদস্য প্রতিনিধি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানায়। বাকি ৩০টি রুটেরই সদস্য প্রতিনিধিরা সরকারি ভাড়া না বাড়ানোর শর্তে সরকারি ভর্তুকি নিতে রাজি হয়নি।
আজ রবিবার বাস মালিক সংগঠনগুলি ফের বৈঠকে বসছে। এই বৈঠকে তারা সরকারি ভর্তুকি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আগামীকাল সোমবার রাজ্যের পরিবহণ দফতরের সঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, তাঁর দফতরের প্রধান সচিবসহ অন্য আধিকারিকরা থাকবেন।
যতদুর জানা গিয়েছে ওইদিনই বাস মালিক সংগঠনের তরফে প্রতিনিধিরা জানিয়ে দেবেন সরকারি সাহায্য নিতে রাজি নয় তাঁরা। ভর্তুকি না দিয়ে ফের বাসভাড়া বাড়ানোর জন্য সরকার সম্মতি দিক এটাই চান বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন এভাবে চলতে পারে না। বাস মালিকদের তো আর গৌরী সেন নেই। এটা সরকারকে বুঝতে হবে। ভাড়া না বাড়ালে রাস্তায় বাস নামানো যাবে না।
একটা বাস চালানোর জন্য রোজ খরচ হয় ৬৫০০ টাকা। এখন টিকিট বাবদ আয় হচ্ছে ৩২০০ টাকা। ফলে বাসপিছু রোজ ক্ষতি হচ্ছে ৩৩০০ টাকা করে। এখন রাজ্য সরকার যে ভর্তুকির কথা ঘোষণা করেছে, তাতে দিনপ্রতি ৫০০ টাকা করে বাসপিছু পাওয়া যাবে। তার পরেও প্রতিদিন ২৮০০ টাকা করে ক্ষতি হবে। এই বিপুল ক্ষতি সয়ে কোনওভাবেই বাস চালানো সম্ভব নয়।
বাস মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ ঘোষ বলেন, যাত্রীদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেজন্য বাস চালানো বন্ধ করতে আমরা বলতে পারি না। তবে ভাড়া না বাড়িয়ে কোনওভাবেই বাস চালানো সম্ভব নয়।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে সোমবারের বৈঠকে ফের তারা বাস ভাড়া বৃদ্ধির জন্য আর্জি জানাবে। এছাড়া সরকার কোন ছয় হাজার বাসকে কীসের ভিত্তিতে ভর্তুকির জন্য বেছে নিচ্ছে সেটাও জানতে হবে। কত শিফ্ট কাজ হবে এইসব বিষয়গুলি খোলাখুলি জানতে হবে।