পশ্চিমবঙ্গে আম্ফান নামক সাইক্লোন যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের চেয়েও ভয়াবহ বলে শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান।
কলকাতার শহরতলির বোটিং ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী বলেন দক্ষিণ কলকাতার তাঁর নিজস্ব কেন্দ্র কসবায় এই ধ্বংসলীলার প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। ১৭০ কিমি বেগে অভূতপূর্ব সাইক্লোনের দাপটে বহু গাছ, টেলিফোন এবং বিদ্যুতের পোল উপড়ে পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গকে এখন মোকাবিলা করতে হচ্ছে তিন-তিনটি বিপর্যয়ের- এক করোনা সংক্রমণ, দুই আম্ফান ঝড়ের প্রভাবে বিপর্যস্ত জীবন এবং তিন, ভিন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ঢল। ঝড়ের প্রভাবে রাজ্যে বহু মানুষ আজ গৃহহারা। এই ধরনের ভয়াবহ সাইক্লোন আমি আমার জীবনে কোনওদিন প্রত্যক্ষ করিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, সাইক্লোনের আগে আমাদের সরকার উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলি থেকে এক লক্ষ মানুষকে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল স্কুল, কলেজে। করোনা সংক্রমণের আবহে এই কাজটা ছিল দুঃসাধ্য, কিন্তু আমাদের সরকার রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলার কার্যকর্তাদের মাস্ক এবং পিপিই কিটস পর্যাপ্ত সংখ্যায় প্রদান করেছিল বলে আমরা এই দুঃসাধ্য কাজ করতে পেরেছি।
আম্ফান সাইক্লোনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ২৪ ঘণ্টা নিরলস কাজ করেছি এবং পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি। এই কাজে ২৪ ঘণ্টা আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সার্বিক নেতৃত্বের কারণে আমরা ২৪ ঘণ্টা আমাদের দফতরের কর্মীদের সতর্ক এবং কাজের মধ্যে রাখতে পেরেছি।
মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, আমার নির্বাচনী কেন্দ্র কসবায় আমরা জীবাণুমুক্ত করার টানেলের সাহায্যে অহরহ ওষুধ স্প্রে করে এলাকা এবং মানুষকে জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। বাজারে এই টানেল লাগানো হয়েছিল। আমরা এ ধরনের আরও টানেল এলাকায় লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন আমার কেন্দ্রের ৬৬ নং ওয়ার্ডে আমরা ১৭ হাজার অস্থায়ী রেশন কার্ড বিলি করেছি, যাতে মানুষ বিনামূল্যে আগামী ৬ মাস খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে পারে। পাশাপাশি, কসবায় ৮০ হাজার পরিবারকে আমরা বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ করেছি, বলে মন্তব্য করেন জাভেদ খান।