কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী ইস্তেহারের প্রতিশ্রুতিমতাে নতুন কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ভাতা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হল। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘর থেকে এই প্রকল্পের ভার্চুয়াল সূচণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এদিন ২২ টি জেলার জেলাশাসকদের দফতর থেকে এই প্রকল্পে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ ১০ হাজার টাকা দেওয়া শুরু হয়ে গেল।
প্রায় ৯ লক্ষ ৭৮ হাজার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার জন্য ২৯০ কোটি টাকা সরাসরি ট্রান্সফার করা হল এদিনই। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন প্রায় ৬০ লক্ষ কৃষক। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে গত সপ্তাহেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে টাকা বছরে ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার করার বিষয়টি অনুমােদন পায়।
বছরে দু’বারে এই টাকা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ক্ষেতমজুর, বর্গাদারদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করা হচ্ছে। মমতা বলেন, কৃষকদের শস্যবীমার টাকা দেয় সরকার।
ইতিমধ্যেই ৭০ লক্ষ কৃষককে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ লক্ষ কৃষক পাবেন কিষাণ ক্রেডিট কার্ড। রাজ্যের ৬ জেলায় ৫০ হাজার একর পতিত জমি চাষযােগ্য করা হয়েছে।
কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকারের ভূমিকা তুলে ধরার পাশাপাশি কৃষকদের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের তুলনা টানলেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জানান, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সব কৃষক টাকা পান না। বর্গাদার, খেতমজুরদের ভাতা দেয় না কেন্দ্রীয় সরকার।
কিন্তু রাজ্য সরকার সব শ্রেণির কৃষকদের ভাতা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষকদের প্রতি মনােভাবের সমালােচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সর্বত্র কৃষক বিক্ষোভ চলছে।
কিন্তু বাংলার কৃষকদের অবস্থা অনেক ভালাে। এখানে কৃষকদের আয় বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ এবং রাজ্য সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প নিয়ে টানাপােড়েন চলছিল।
বিজেপিও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এই প্রকল্পে ভাতা বাড়ানাের কথা বলেছিল। কিন্তু নির্বাচনে গেরুয়া শিবির ধাক্কা খাওয়ায় বাড়তি ভাতা দেওয়ার সেই প্রতিশ্রুতি অর্থহীন হয়ে পড়ে। তাই অন্য কেউ কথা না রাখলেও, কথা রাখলেন মমতা। আর কথা রেখে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ণের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার।