• facebook
  • twitter
Saturday, 16 November, 2024

নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ, অভিযুক্ত ঘুরছে বুক ফুলিয়ে

নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করতে নানা টালবাহানা করে। এফআইআর করলে ব্যাপারটি কোর্টে যাবে।

প্রতীকী চিত্র

খড়্গপুরের ইন্দা নিউ টাউন এলাকার একটি আবাসনে এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ওই আবাসনেরই আবাসিক এক মোবাইল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। নাবালিকার অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, মহিলা থানায় অভিযোগ জানানোর পরেও অভিযুক্ত ব্যক্তি এখনো প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে । পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করবে বলে তাদের মনে হচ্ছে না ।এফআইআর দায়ের করার ৪৮ ঘণ্টা পরেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।

গত ১১ নভেম্বর অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরতা ওই নাবালিকা স্কুল থেকে আবাসনে ফেরার সময় লিফটে ওঠে। অভিযুক্ত ব্যক্তি বিকাশ আগরওয়ালও একইসঙ্গে লিফটে চড়ে। বিকাশের ফ্ল্যাট আবাসনের চারতলায় । নাবালিকার ফ্ল্যাট আবাসনের পাঁচ তলায়। লিফটে ওঠার পর বিকাশ ওই নাবালিকাকে হাতে চকলেট দেয়, গালে চুম্বন করে এবং বলে আই লাইক ইউ। এরপর তাকে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ওই প্রস্তাব নিয়ে নাবালিকাকে ভেবেচিন্তে পরের দিন জানাতে বলে। বিকাশ নাবালিকাকে এও বলে যে এই কথাগুলো একান্তভাবেই তার এবং নাবালিকার মধ্যে সিক্রেট ব্যাপার । এটা যেন সে বাবা মাকে না জানায়। এর আগেও বেশ কয়েকদিন অভিযুক্ত ব্যক্তি লিফটে নাবালিকাকে চকলেট দিয়ে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। মেয়েটি সে কথা মাকে জানিয়েছিল। মেয়েটির বাবা বিকাশের সঙ্গে দেখা করে তাকে সতর্কও করেছিলেন। তবে ১১ তারিখ ঘটনাটি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। সেদিনের ঘটনা বিকেলে মাকে জানায় নাবালিকাটি। এর পরেই খড়গপুর টাউন মহিলা থানায় গিয়ে অভিযুক্ত বিকাশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার মা।

নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করতে নানা টালবাহানা করে। এফআইআর করলে ব্যাপারটি কোর্টে যাবে। পুলিশ কিছু করতে পারবে না। সে কথা জানিয়েও মহিলা থানার ওসি তাদের অভিযোগ জানানো থেকে বিরত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ নাবালিকার মায়ের। তিনি জানান, ‘আমাদের মনে হয়েছে পুলিশ অভিযোগ নিতে চায় না। মহিলা থানার ওসি আমাদের জানান পুলিশের গ্রেপ্তার করার অধিকার নেই । সেটাই এখন আইন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারব না। পুলিশ কিছু করতে চাইছে বলে আমার মনে হয়নি। পুলিশ চাইলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারতো। কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে ব্যাপারটা ছেড়ে দিলে বিকাশের মতো ব্যক্তিরা এরপরে আরো বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে।’

তিনদিন পরে গত ১৪ নভেম্বর পকসো আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। কিন্তু তারপরে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত ব্যক্তি এখনো বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন নাবালিকার মা এবং বাবা। নাবালিকার উপর এই জঘন্য আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আবাসনের অন্য আবাসিকরাও । আবাসনের বাসিন্দা, মীনাক্ষী কুলাভি বলেন, ‘এই মেয়েটি যা বলছে তা সত্যি হলে এটা জঘন্যতম অপরাধ। আমরা চাই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
অভিযুক্ত বিকাশ আগরওয়াল গোলবাজারে নিজের মোবাইল দোকানে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিষয়টি বিচারাধীন। আমি কোন মন্তব্য করব না।’