‘গণইস্তফা’ মানে পদত্যাগ নয়, সাফ জানিয়ে দিল নবান্ন

নবান্ন। ফাইল চিত্র

অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থন জানিয়ে গত কয়েকদিনে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। একযোগে এই ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টিকে ‘গণইস্তফা’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু এই ‘গণইস্তফা’ মানে কোনওভাবেই পদত্যাগ নয়, সার্ভিস রুলে তেমনটাই বলা আছে। শনিবার নবান্নে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানালেন ম‌ুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

আলাপন বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই ‘গণইস্তফা’-র কথা শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্পষ্ট করে দেওয়া ভালো, কেউ যদি ইস্তফা দিতে চান, তাহলে তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে তা দেওয়া উচিত। সার্ভিস রুলে তেমনটাই বলা হয়েছে। অনেক জায়গাতেই ‘গণইস্তফা’ জমা পড়েছে। এগুলিকে পদত্যাগপত্র নয়। রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, সরকার যেহেতু প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ভাবে নিয়োগপত্র দিয়েছে, তাই ইস্তফাপত্রও আলাদা আলাদা হওয়া উচিত।

নবান্নের অন্দরের খবর, ‘গণইস্তফা’র মাধ্যমে আসলে রাজ্য সরকারকে চাপে ফেলার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই ইস্যু মোকাবিলা করার জন্য রাজ্য সরকার যে তৈরি, তা স্পষ্ট ম‌ুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য। আলাপনের বক্তব্যের মূল কথাটি হল, কেউ ইস্তফা দিতে চাইলে ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে তা বৈধ বলে গণ্য হবে। ‘গণইস্তফা’ বিষয়টি সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশলমাত্র।


এই ‘গণইস্তফা’ প্রসঙ্গে খানিকটা একই রকমের সুর শোনা গিয়েছিল তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের মুখে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘SSKMএর কয়েকজন ডাক্তারের তথাকথিত গণ-ইস্তফা প্রসঙ্গে। 1) ব্যক্তিগতভাবে নিয়মমত ইস্তফা দিতে বলা হোক। সরকার গ্রহণ করুক। 2) এঁদের মধ্যে যাঁরা লবি করে বদলি এড়িয়ে দীর্ঘকাল এখানেই আছেন, তাঁদের অবিলম্বে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হোক। 3) এঁদের মধ্যে যাঁরা RMO দের আবাসন দীর্ঘকাল ধরে আটকে সুবিধাজনক কোয়ার্টারে থেকে যান, অবিলম্বে সেসব খালি করানো হোক। 4) এঁদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত বিভাগে থাকেন না, OPD করেন না; তাঁদের বিদায় করা হোক। শুদ্ধিকরণ হলে সর্বত্র হোক। শুরু হোক কার্ডিও থোরাসিক সার্জারি বিভাগ থেকে।’

সাংবাদিক বৈঠকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আরজি কর এবং অন্যান্য হাসপাতাল মিলিয়ে একাধিক ‘গণইস্তফা’-র চিঠিতে এখনও পর্যন্ত দুশোর কিছু কম সই জমা পড়েছে। এই অন্যান্য হাসপাতালগুলির মধ্যে অন্যতম – কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল, এসএসকেএম হাসপাতাল, সাগর দত্ত মেডিক্যাল এবং এনআরএস।