সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন ঘিরে ধুন্ধুমার কাঁথিতে। দফায় দফায় সংঘর্ষ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে। এরই মধ্যে ভুয়ো ভোটার ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক অখিল গিরি। পড়ে গিয়ে হাতে গুরুতর চোট লেগেছে তাঁর। রামনগরে একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের অদূরে ঘটেছে এই ঘটনা। শুরু হয়েছে তাঁর চিকিৎসা।
জানা গিয়েছে, এদিন রামনগরের ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বেশ কয়েকজন ভোটার ভোট দিতে যান। তাঁদের হাতে ছিল আধার কার্ড-সহ বেশ কয়েকটি পরিচয়পত্রের জেরক্স কপি। তখন কর্তব্যরত পুলিশ তাঁদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেন। তাঁদের আসল পরিচিয়পত্র দেখতে বলেন। বিষয়টির প্রতিবাদ করতেই পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরির। বাগবিতণ্ডার সময় ধাক্কা লেগে ছিঁটকে পড়ে যান তিনি। যার জেরে হাতে চোট লাগে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকা তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। তাঁর হাতে বরফ দিয়ে শুশ্রূষার চেষ্টা করেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে অখিলগিরির অভিযোগ, সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে গাড়ি পাঠিয়ে ভুয়ো ভোটারদের ভোট দিতে আনা হচ্ছে। এর আগেও একাধিক ভোটার জেরক্স কপি নিয়ে ভোট দিতে আসেন। কিন্তু পুলিশ কাউকে বাধা দেয়নি। কেন পুলিশ এভাবে ভোটারদের ঢোকাচ্ছে, তা নিয়ে শুরু হয় বচসা। তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপি প্রার্থীদের কোনও অস্তিত্ব নেই। পুলিশ তাঁদের ভোটারকে বাধা দিচ্ছে। কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি বলেন, চোরের মায়ের বড় গলা। মানুষ নেই, জনবল নেই, ভোটার নেই। এখন পিঠ বাঁচাতে হবে। তাই শুভেন্দু অধিকারীর চ্যালারা এসব করছেন। হাওয়া বেরিয়ে গিয়েছে। তাই একটাই কাজ হাওয়া গরম করা।
অন্যদিকে কাঁথি পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর তাপস দলাইয়ের অভিযোগ, ভোটারদের থেকে ভোটার কার্ড এবং স্লিপ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখলেও কিছু বলছে না। উল্টে মারধর করা হচ্ছে। বিজেপির লোক গেলে মারছে এবং ঠ্যালাঠেলি করছে। একটা সমবায় নির্বাচনে এসব করছে। ভবিষ্যতে কী করবে কে জানে!
প্রসঙ্গত টানা ২৩ বছর কাঁথি কৃষি ও সমবায় সমিতির সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী। এই মুহূর্তে বাংলার ২৪টি সমবায় ব্যাঙ্কের মধ্যে এটি শীর্ষে রয়েছে। বছরে এখানে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়। শনিবার সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দুপুর ২টো পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। ৩০ মিনিটের বিরতির পর ভোট গণনা শুরু হয়। কিন্তু ৭৮টি আসনের মধ্যে ১৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বাকি আসনে ভোটাভুটি হয়। মোট ভোটার ৫৮ হাজার ১৫৩ জন। ভোট শুরু হতেই অশান্ত হয় এলাকা। সকালে সুপ্রকাশ গিরির সঙ্গে ঝামেলা হয়। দুপুরে রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির গায়ে হাত তোলার অভিযোগ ওঠে। ডিএসপি আবু নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন অখিল। অখিলের অভিযোগ, বিজেপির মদতে ভুয়ো ভোটার ঢোকানো হচ্ছিল। তার প্রতিবাদ করায় গায়ে হাত তুলেছে পুলিশ।