ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এল। পুলিশ সূত্রে দাবি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করতে এজেন্ট নিয়োগ করত প্রতারকরা। ভাড়া করা এই অ্যাকাউন্ট জোগাড় করে দেওয়ার জন্য টাকা নিতেন এজেন্টরা। এক হাজার টাকা কমিশনের ভিত্তিতে এজেন্ট নিয়োগ হত। এরপরই পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরগুলির সঙ্গে ভাড়া করা অ্যাকাউন্টের নম্বর পাল্টে দেওয়া হত। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা ঢুকলেই তা তুলে নিত প্রতারকরা।
তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা করে ট্যাবের টাকা দেয় রাজ্য সরকার। চলতি বছর পুজোর আগেই এই টাকা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেক পড়ুয়া অভিযোগ করে, এককালীন এই ১০ হাজার টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। জানা গিয়েছে, রাজ্যজুড়ে দুই হাজারের বেশি পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। তদন্তে নেমে বড়সড় কেলেঙ্কারির হদিশ পায় পুলিশ প্রশাসন। এই মামলায় ইতিমধ্যেই ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ১৩৪২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এই সব অ্যাকাউন্টে মোট ৭০ লক্ষ টাকারও বেশি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশ ১২২টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে।
এজেন্টরা ভাড়া করা অ্যাকাউন্ট প্রতি এক হাজার টাকা করে পেলেও যাদের অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়া হত তাঁরা পেয়েছেন ন্যূনতম ৩০০ টাকা। সম্প্রতি এমনই এক এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি থেকে রবীন্দ্রপ্রসাদ সিংহ নামে সেই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। তিনি ট্যাবকাণ্ডে এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রপ্রসাদের একটি জেরক্সের দোকান রয়েছে। সেই দোকানে গিয়েই প্রতারকরা তাঁকে টাকার লোভ দেখায়। তারপর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জোগাড় করে দিতে রাজি হয়ে যান রবীন্দ্রপ্রসাদ। পড়ুয়াদের টাকা হাতাতে এই সব ভাড়া করা অ্যাকাউন্টই ব্যবহার করত প্রতারকরা।