হাজার পেরলো রাজ্যের কোভিড সংক্রমণ। বুধবার স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, বিগত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৮৯ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। যা নিয়ে বঙ্গে করোনা আক্রান্ত হলেন ১৭ লক্ষ ৩২ হাজার ৯০৬ জন।
এই মুহূর্তে পজিটিভিটি রেট ২.৮৪ শতাংশ। শুধুমাত্র কলকাতায় নতুন করে ৫৪০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৫।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই সংখ্যা ৬০ জন। হুগলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯। হাওড়ায় ৭৯। এছাড়াও পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ১৫ এবং ১১।
ঝাড়গ্রামে তিন জন, বীরভূমে ৩৫ জন, নদিয়ায় ১২ জন, মুর্শিদাবাদে এক জন, মালদায় ৮, দক্ষিণ দিনাজপুর ৪, উত্তর দিনাজপুর ৬, জলপাইগুড়ি ১৪, কালিম্পং ৪, দার্জিলিং ৯ , কোচবিহার ৭ এবং আলিপুরদুয়ারে ৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
১৭৭ দিন পর এই একদিনে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন।
দৈনিক মৃত্যুর নিরিখে প্রথম স্থানে হাওড়া ও কলকাতা। এখানে তিনজন করে প্রাণ হারিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৯,৭৪৫ জন। বর্তমানে রাজ্যে সেফ হোমের সংখ্যা ২০০।
গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ থেকে ৫০০-র ঘরে ঘোরাফেরা করলেও মঙ্গলবার রাতে গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে কার্যত দ্বিগুণ হয়েছে।
সংখ্যাটি এক ধাক্কায় গিয়েছে ৭০০-র ঘরে (৭৫২ জন)। তা থেকেই প্রশ্ন উঠছে, সংক্রমণ কি আবার ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে? দিন তিনেক পরেই বর্ষবরণ।
বর্ষশেষের নিশিযাপন আর ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিনটি উদযাপনের তাগিদে কলকাতা ৩১ ডিসেম্বর রাত থেকে শৃঙ্খলা ভেঙে, অতিমারি বিধি উড়িয়ে ওমিক্রনকে স্বাগত জানাতে হামলে পড়বে কিনা, তা নিয়েও মহা উদ্বেগে আছেন চিকিৎসকরা।
আশঙ্কার কারণ হিসেবে তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বা সমাজমাধ্যম সহ সর্বত্র প্রকাশিত বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটের জনস্রোত এবং এক শ্রেণির মানুষের উন্মাদনাই তো দেখিয়ে দিয়েছে, কোভিড বিধি কীভাবে ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাঁচজন।
আর কারও খোঁজ মেলেনি, যাঁকে ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা যায়। ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবকের আজ, বুধবার পুনরায় কোভিড পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, স্কুলগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই ১৫-১৮ বছর বয়সীদের তালিকা তৈরি করা হবে। কলেজের মতোই স্কুলের কাছাকাছি হাসপাতালের সঙ্গে সেগুলিকে যুক্ত করা হবে টিকাকরণের জন্য। আবার স্কুলে গিয়েও দেওয়া হতে পারে টিকা।
কিংবা যেসব কেন্দ্রে দু’টি ডোজ এবং দু’রকমের টিকাই দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ওই বয়সীদের জন্য এবং বয়স্কদের জন্য নির্দিষ্ট লাইন বা স্লট বুক করার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। কয়েক দিনের মধ্যে এই সব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।