নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর, ২৭ মার্চ— মুশিদাবাদের বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে সরব হলেন কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী৷ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ের ছবি ভোটের প্রচারে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন অধীরবাবু৷ যে অভিযোগটা নির্বাচন কমিশনে অধীরবাবু করেছেন, তাতে তিনি মূলত উল্লেখ করেছেন, ইউসুফ পাঠান ২০১১ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ছিলেন৷ কিন্ত্ত তিনি বিশ্বকাপের ছবি, সেদিন মাঠে ভারতীয় দলের যে সমস্ত বাকি সদস্যরা ছিলেন, তাদের ছবি নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করছেন৷ এভাবে নির্বাচনী প্রচার করা যায় না বলেই অধীরবাবুর দাবি৷ যুক্তি হিসাবে তিনি দেখিয়েছেন, বিশ্বকাপের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই৷ বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট দলের কোনও সদস্য নির্বাচনে যে কোনও দলের প্রার্থী হতেই পারেন৷
কিন্ত্ত তার মানে এটা নয়, সে দিন মাঠে যারা খেলেছিলেন প্রত্যেক খেলোয়াড় সেই রাজনীতি দলের সঙ্গে যুক্ত৷ এক্ষেত্রে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ইউসুফ পাঠান তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন৷ কিন্ত্ত তার মানে এই নয়, বাকি যে সমস্ত ক্রিকেটাররা সেদিন খেলেছিলেন, তারা সবাই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত৷ ফলে এ জাতীয় নির্বাচনী প্রচার বন্ধের আবেদন নির্বাচন কমিশনের কাছে করেছেন অধীর চৌধুরী৷ সেই তিনি আরও অবেদন করেছেন, কোনোভাবেই যেন নির্বাচনী প্রচারে বিশ্বকাপের ছবি এবং বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের ছবি ব্যবহার করা না হয়, সেটা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে৷ যদিও ইউসুফ পাঠান জানিয়েছেন, তিনি নিজে কোথাও কোনও পোস্টার লাগাননি৷ তার প্রচুর ফ্যান রয়েছে৷ তারা এই পোস্টার লাগিয়ে থাকতে পারে৷
এদিন এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়কে উনি নিজের জয় বলে দেখাচ্ছেন. সেটা তো ছিল আমাদের জাতীয় জয়৷ বিশ্বকাপটা তো কারও ব্যক্তিগত নয়৷ বিশ্বকাপজয়ী দলের সমস্ত খেলোয়াড়রা কি তৃণমূল করে? বিশ্বকাপটা তো কোনো পার্টির সিম্বল হতে পারে না৷ সেটা দেশের সিম্বল৷ দেশের সিম্বলকে পার্টির সিম্বল হিসাবে ব্যবহার করে একটা অদ্ভূত ধরনের প্রচার চলছে৷ এটা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের মধ্যে পড়ে৷ আমাদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে জানাতে তো হবে৷ সেটাই জানানো হচ্ছে৷ নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে সবাইকে৷ নির্বাচনী বিধি যখন লাঘু হয়ে গিয়েছে, তখন সেটা আমাদের সবাইকেই মেনে চলতে হবে৷’
এদিকে এ নিয়ে সাংবাদিকরা ইউসুফ পাঠনকে প্রশ্ন করলে, উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের সঙেঅগ আমার ছবি ছিল. আমরা বিশ্বকাপ জিতেছি৷ গোটা ভারতবর্ষে খুব কম মানুষের জীবনেই এটা ঘটেছে যে তার হাতে বিশ্বকাপ এবং তিনি বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন৷ সেই বিশ্বকাপে আমি খুব পরিশ্রম করেছিলাম৷ গোটা ভারতবর্ষ তার সাক্ষী রয়েছে৷ এ নিয়ে কেউ যদি কোথাও অভিযোগ করে থাকে, তাহলে সেটা আমাদের লিগ্যাল টিম দেখবে এবং তারাই সমস্যার সমাধান করবে৷ তবে আমার প্রচুর ফ্যান রয়েছে৷ তারা ছবি তুলে কোথাও লাগাতেই পারে৷ সেটা তাদের অধিকার রয়েছে৷ আমি তো কোথাও গিয়ে কিছু লাগাইনি৷ এটা যারা আমার ফ্যান রয়েছে তাদের প্রেম এবং ভালোবাসা৷ তারা যেখানে খুশি যে কোনও পোস্টার লাগাতে পারে৷ সেখানে আমার কোনও বিধি নিষেধ নেই৷’