মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সাংসদ অধীর চৌধুরি। আসন্ন পুরভোট এবং রাজ্যপালকে শিল্পের ব্যাপারে সহযোগিতা করার মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান নিয়ে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে, তিনি দুটো বিষয়েই চরম কটাক্ষ করেন রাজ্য সরকারকে।
পুরভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আগে বা পরে নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমার চিন্তা বা আশঙ্কা একটাই, নির্বাচনটা নির্বাচন হবে না, সেটা প্রহসন হবে। কারণ আমরা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখেছি মুর্শিদাবাদ জেলার কোথাও মনোনয়ন দাখিল করতে দেওয়া হয়নি। মানুষকে ভোট দিতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
হাজার হাজার আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল পার্টি তাদের জয় সুনিশ্চিত করেছে সে কারণেই আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, পুর নির্বাচনটা হবে, নাকি পঞ্চায়েতের মতো প্রহসন হবে? মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, নাকি মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না?’ রাজ্যের শিল্পের উন্নয়নে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ নিয়ে সাংবাদিকরা এদিন অধীরবাবুর প্রতিক্রিয়া চাইলে, তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অফার দিতে পারেন। তাঁকে বলতে পারেন, আপনি আমার বিরোধিতা না করে রাজ্যপালের পদ ছেড়ে দিন। আপনাকে আমি রাজ্যসভার সদস্য করছি। শিল্পের উন্নয়নের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন কাউকে দক্ষ এবং যোগ্য মনে করলেন না।
যাঁর সঙ্গে দু’বেলা বিরোধ, যাকে গালাগালি দিতে দেখেছি, তাকেই এখন পশ্চিমবঙ্গের শিল্প উন্নয়নের কাণ্ডারী হিসেবে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে মনে করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এটা তার ব্যাপার। যদিও এখনও পর্যন্ত এই বাংলায় কোনও শিল্প আসেনি। শিল্প আসার ক্ষেত্রে কতগুলি প্রক্রিয়া থাকে। এ রাজ্যে সে সমস্ত প্রক্রিয়া নেই।
তাই এ রাজ্যে এখনও কোনও শিল্প আসেনি। এটা আমাদের সার্বিক ব্যর্থতা। অথচ এখানে শিল্প গড়ে ওএঠার সব সম্ভাবনা আছে। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা একের পর এক সামিট করতে দেখেছি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেই বাণিজ্য সামিট বন্ধ করে দিয়েছেন।
এক একটি সামিটে শিল্পপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘোষণা করতেন, দু’লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার কোটি, কখনও দু’লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার কোটি, আবার কখনও দু’লক্ষ ত্রিশ হাজার কোটি বিনিয়োগের।
কিন্তু কোথায় গেল সেই সমস্ত প্রতিশ্রুতি, কোথায় গেল সে সমস্ত শিল্পের বর্ণনা আমাদের জানা নেই। বাংলার মানুষ একটি শিল্পের কথাই জানেন। সেই শিল্পের নাম পরিযায়ী শিল্প। লোটা কম্বল, বাইরের রাজ্যে পাড়ি দাও, আরব দুনিয়ায় পাড়ি দাও, রোজগার করো, কামাও, এসো বাংলায় এবং পরিবারকে রক্ষা করো। এই পরিযায়ী শিল্পই হচ্ছে বাংলার একমাত্র শিল্প।