• facebook
  • twitter
Monday, 7 October, 2024

গণপ্রহারে নির্যাতন ও হত্যায় অভিযুক্তের মৃত্যু

ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জয়নগরের ঘটনার রেষ কাটতে না কাটতে ফের ধর্ষণ ও খুন! আবার প্রশ্নের মুখে নারী নিরাপত্তা।

জয়নগরের পর পটাশপুর। ফের ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ! এবার এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল থেকে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। সেই ঘটনায় উন্মত্ত জনতার মারে মৃত্যু হল অভিযুক্তেরও। পটাশপুরের ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্যাতিতা মহিলা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর এলাকার বাসিন্দা। বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। কারণ ওই মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। অভিযোগ, সেই সুযোগ নিয়েই তাঁকে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যান প্রতিবেশী সুখচাঁদ মাইতি। এর পরই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, ধর্ষণের পর কীটনাশক খাইয়ে ওই গৃহবধূকে খুনেরও অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধ।

কীটনাশক শরীরে যাওয়ায় ওই মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা ওই মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই অভিযুক্তর বাড়িতে হাজির হয় উত্তেজিত জনতা। সুখচাঁদকে বাড়ি থেকে বের করে আনেন গ্রামেরই মহিলারা। রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। গণধোলাইয়ের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি দৈনিক স্টেটসম্যান।

জানা গিয়েছে, এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিযুক্ত প্রৌঢ়কে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে অভিযুক্তকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের দেহ এগরা থেকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।

কেন খুন? এ বিষয়ে মৃত বধূর আত্মীয়রা জানান, সুখচাঁদ এবং মৃতা দূর সম্পর্কের আত্মীয়। দু’জনের বাড়িও কাছাকাছি। সুখচাঁদের সঙ্গে এক মহিলার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। তাঁদেরই ঘনিষ্ঠভাবে দেখে ফেলেছিলেন ওই মহিলা। বিষয়টি যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তাই পথের কাঁটা সরাতে ওই বধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে সুখচাঁদ। ধর্ষণের পর বিষ খাইয়ে খুনও করা হয় বধূকে।

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। আইনি প্রক্রিয়া মেনে ইতিমধ্যেই মহিলার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি গণপিটুনিতে মৃত ব্যক্তির দেহও ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’

শনিবারই চতুর্থ শ্রেণির এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকা। পুলিশের বিরুদ্ধে জনরোষ, পরিবার সহ গ্রামবাসীদেরে বিক্ষোভ, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা-আগুন। সব মিলিয়ে শনিবার দিনভর রণক্ষেত্র ছিল জয়নগর। ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জয়নগরের ঘটনার রেষ কাটতে না কাটতে ফের ধর্ষণ ও খুন! আবার প্রশ্নের মুখে নারী নিরাপত্তা।