বুধবার মধ্যরাতে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার ও রাজ্য সরকারের মধ্যে নবান্নের সভাঘরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে হয় বৈঠক। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে হওয়া বৈঠকের নির্যাস লিখিত আকারে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়ে দিল জুনিয়র ডাক্তাররা। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভোরে নির্যাস সম্বলিত ইমেল মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। নবান্নের তরফে উত্তর পাওয়ার অপেক্ষা করছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা।
বুধবার মধ্যরাতের বৈঠক থেকেও মেলেনি সমাধান সূত্র। নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট জানান, কর্মবিরতি চলবে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণের দাবিতে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান মঞ্চ থেকে প্যান্ডেলের বাঁশ এবং ফ্যান খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বুধবার রাত থেকেই প্যান্ডেলের বাঁশ এবং ফ্যান খুলে নিয়ে যাচ্ছিল ডেকরেটার্সের লোকজন। অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য কারও কাছ থেকে কোনও চাপ আসছে কিনা সেবিষয়ে জনমানসে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে আন্দোলনরত এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘বুধবার রাত থেকেই বাঁশ, ত্রিপল খুলে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সেটা দেখতে পাই। তা নিয়ে নানা ধরণের গুজব তৈরি হয়েছে। আর এই ত্রিপল, ফ্যান সবই সাধারণ মানুষের থেকে পাওয়া। এবার কেউ যদি মনে করে এই বিষয়ে আর অর্থ দেবেন না, সেক্ষেত্রে অবস্থান মঞ্চ থেকে নিশ্চয়ই ফ্যান, ত্রিপল খুলে নিয়ে যাওয়া হবে। এটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। পুলিশ এখনও আমাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন। কোনও চাপ আসেনি। আমাদের আন্দোলন চলছে।’
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে বৈঠক সম্পন্ন হলেও জট কাটার কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। বৈঠক শেষে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, ‘স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ, হাসপাতালগুলিতে সার্বিক নিরাপত্তা, থ্রেট কালচার ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকার আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে। তবে কয়েকটি জায়গায় অসুবিধে আছে। আমরা মুখ্যসচিবের কাছে আলোচনার কার্যবিবরণী চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা আমাদের দেওয়া হয়নি। শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন।’
জুনিয়র ডাক্তারদের কথায়, ‘সরকারের তরফে দেওয়া মৌখিক আশ্বাসে আমরা রাজি ছিলাম না। সরকারের কার্যবিবরণী তৈরি করা এবং লিখিত আশ্বাস দেওয়ার অনীহায় আমরা হতাশ। তবে মুখ্যসচিব আমাদের বলেছেন বৃহস্পতিবার আমাদের দাবিগুলিকে খসড়া আকারে ওনার কাছে ইমেল করতে। তারপর তাঁরা সিদ্ধান্ত জানাবেন। আমরা কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু যতক্ষণ আমাদের ন্যায্য দাবিগুলি পূরণ না-হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন এবং কর্মবিরতি চলবে।’