ফরাক্কায় চলন্ত অবস্থায় দু’ভাগ মালগাড়ি, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

চলন্ত অবস্থায় দু’ভাগ হয়ে গেল মালগাড়ি। কোনওক্রমে রক্ষা পেল বড় দুর্ঘটনা থেকে। মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কার ঘটনা। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খুলে যাওয়া মালগাড়ি দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। মালগাড়িটির গতি কম থাকায় লাইনচ্যুত হয়নি।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এই বিপত্তি ঘটে। একটি মালগাড়ি ধুলিয়ান থেকে ফরাক্কার দিকে যাচ্ছিল। খোদাবন্দপুর এলাকায় চলন্ত অবস্থায় আচমকায় মূল ইঞ্জিন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মালগাড়ির কয়েকটি কামরা। সেগুলিকে পিছনে ফেলেই এগিয়ে যায় ইঞ্জিন।

কী কারণে মালগাড়ির কয়েকটি কামরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, তা খতিয়ে দেখছেন রেলকর্মীরা। মালগাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে। মালবাড়ির চালক এবং গার্ডকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রেল পুলিশের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। মালগাড়িটি জোড়া লাগানোর কাজ চলছে।


শুক্রবারই বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় বান্দ্রাগামী গরিব রথ এক্সপ্রেস। গুজরাতের কিম রেল স্টেশন লাগোয়া রেললাইনে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর ছক কষেছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক বা একাধিক দুষ্কৃতী। সেই জন্য খুলে নেওয়া হয়েছিল লাইনে থাকা ফিশ প্লেট এবং চাবি। এক রেলকর্মী বিষয়টি আঁচ করে কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন।

পশ্চিম রেলওয়ের ভাদোদরা বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিশ প্লেট এবং চাবি আপ লাইন থেকে সরিয়ে ওই ট্র্যাকেই রাখা হয়েছিল। সুরাটের কোসাম্বা এবং কিম রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে পরিদর্শনের সময়, কি-ম্যান সুভাষ কুমার দেখতে পান, ট্র্যাকের ফিশ প্লেটটি সরানো হয়েছে এবং চাবিগুলি ফেলে দেওয়া হয়েছে।

সুভাষ কুমার তৎক্ষণাৎ কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন। তারপর ট্র্যাক মেরামত করা হয়। শনিবার ভোর ৫টা ২৭ মিনিট নাগাদ এ ঘটনা ঘটে। সেই সময় ওই লাইন দিয়ে বান্দ্রাগামী গরিব রথ এক্সপ্রেস আসার কথা ছিল। মাঝপথেই থামানো হয় ট্রেনটিকে।

বেশ কিছুদিন ধরেই যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ্যে আসছে। রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কোথাও দেখা যাচ্ছে রেললাইনে ভারী কিছু ফেলে রাখা হচ্ছে, আবার কোথাও রেলের ট্র্যাকের ক্ষতি করা হচ্ছে।

কখনও রেলওয়ে ট্র্যাকে সিলিন্ডার পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে, আবার কখনও কাঠ বা সিমেন্টের স্ল্যাব রেল ট্র্যাকে রাখা হচ্ছে। উত্তর প্রদেশের কানপুরে রেলওয়ে ট্র্যাকে সিমেন্টের স্ল্যাব বসানো হয়েছিল। এর ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ট্র্যাক। সময়মতো তথ্য পাওয়ায় বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় কালিন্দী এক্সপ্রেস।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই বার বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে রেল। জুন মাসে শিলিগুড়ির কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ৮ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বেশ কয়েকজন। তারপর ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে হাওড়া-মুম্বই মেল। মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজনের। চণ্ডীগড়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসও দুর্ঘটনায় কবলে পড়েছে।