মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমেছে প্রায় চার হাজারের মতো বেসরকারি বাস। যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ কমেছে। তবে ভাড়াবৃদ্ধির দাবি থেকে সরে আসেনি বাসমালিক সংগঠনগুলি। সমস্যার সমাধানে ফের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি বাসমালিক সংগঠনগুলির। অন্যদিকে শহরের রাস্তায় এদিন রাজাবাজার থেকে হাওড়া পর্যন্ত ট্রাম চলাচলের ট্রায়াল রান শুরু হল বৃহস্পতিবার।
রাস্তায় বেসরকারি বাস না নামালে সরকার অধিগ্রহণ করে নেবে বেসরকারি বাস। প্রয়োজনে সরকারি পরিবহণকর্মী দিয়ে চালানো হবে বাস। মুখ্যমন্ত্রীর এই চরম বার্তা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকেই রাজপথের চিত্ৰবদল। রাস্তায় নামে বেসকারি বাস।
পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারি জানান, এদিন প্রায় ৩৮০০ বেসরকারি বাস রাস্তায় নেমেছে। সরকারি বাস চলেছে ১৮০০-এর মতো। তাই বৃহস্পতিবার যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ কম হয়েছে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, টার্মিনাস থেকে ওঠা যাত্রীদের বাস পেতে অসুবিধে না হলেও রাস্তায় অপেক্ষমাণ যাত্রীদের নাকাল হতে হয়েছে। কারণ সরকারি বা বেসরকারি বাসের আসনসংখ্যা পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর মাঝপথে বাস খালি না হলে যাত্রী তোলেনি বাস কিংবা মিনিবাস। ফলে টার্মিনাস ছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের হাপিত্যেশ করেই থাকতে হয়েছে।
এদিকে বুধবার ছুটির দিনেই পরিবহণ দফতরে বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে বাসমালিকরা একের পর এক নতুন দাবি তোলেন। সেইসব দাবি বিবেচনা করা হবে, এই আশ্বাসে কিছুটা রফাসূত্র বেরনোর সম্ভাবনা দেখা দেয়। তারপরই বৃহস্পতিবার বেশ কিছু বেসরকারি বাস রাস্তায় নামে।
বাসমালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করা হয়। কলকাতাসহ ছয় জেলা থেকেই একই প্রস্তাব ওঠে। ডিজেল থেকে সেস প্রত্যাহার করা, ইএমআই শোধ করার ক্ষেত্রে ছাড় ইত্যাদি দাবিও করা হয়।
বৃহস্পতিবার জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের তরফে বলা হয়, আপাতত কিছুদিন বেসরকারি বাস রাস্তায় নামানো হবে।
এরপর রাজ্য সরকার তাদের দাবি পুরণের ক্ষেত্রে কী ভাবনাচিন্তা করছে, তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বাস মালিক সংগঠনগুলি। তাদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখার আর্জি জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কী সিদ্ধান্ত নেন, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাসমালিকেরা।
এদিকে বৃহস্পতিবারই রাজাবাজার থেকে হাওড়া পর্যন্ত ট্রাম চলাচল চালু হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার এই রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রাম চালানো হয়েছে। সকাল সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ২৫ মিনিট অন্তর চলবে এই ট্রাম।
প্রায় সাড়ে তিন মাস পরে শহর কলকাতায় ট্রাম পরিষেবা চালু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বালিগঞ্জ থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত ছুটছে ট্রাম। বাকি পাঁচটা রুটেও ট্রাম চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আম্ফানের সময় ট্রামলাইনের ওপর গাছ পড়ে সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বর্তমানে ওভারহেড লাইনের মেরামতি ও ট্রামলাইন সংস্কারের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। রাজ্য পরিবহণ নিগম মনে করছে সবক’টা রুটে ট্রাম চালু হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকটা কমবে।