আপাত ভাবে পথ চলা শেষ করল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বিনামূল্যের স্বাস্থ্য-প্রকল্প ‘সেবাশ্রয়’। সুদীর্ঘ ৭৫দিনের যাত্রাপথে চড়াই উতরাই পথ পেরিয়ে অবশেষে সফলতার সঙ্গে শেষ হল এই শিবির। সেবাশ্রয় থেকে উপকৃত হলেন প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ, উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার পাশাপাশি মানুষ পেলেন বিনামূল্যের ওষুধ। সেবাশ্রয়ের সান্নিধ্যে সুস্থতার পথে হুগলির ছোট্ট নেহা মাঝি এবং আলমিশা খাতুন। বহুমূল্যের কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট-র ব্যবস্থা করে জলপাইগুড়ি এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের দুই শিশুর শ্রবণ সমস্যার দূরীকরণ করেছেন সাংসদ। অভিষেকের তৎপরতায় সফল অস্ত্রোপচার করিয়ে মৃত্যুভয়কে জয় করেছে যুবক শেখ হাসিবুল থেকে শিশু আলতার হোসেন ঘরামি। দুষ্প্রাপ্য ইঞ্জেকশনের ব্যবস্থা করে ছোট্ট কৃতি মান্নার জীবনযুদ্ধের সঙ্গী হয়েছেন অভিষেক।
এছাড়াও ক্যান্সার থেকে নানা মারণ রোগে আক্রান্তদের নতুন জীবন দান করেছে সেবাশ্রয়। অগণিত মানুষের দৃষ্টিশক্তি এবং শ্রবণশক্তি ফেরানোর পাশাপাশি ৪০০-র অধিক মানুষকে বিনামূল্যে চশমাও প্রদান করেছেন সাংসদ।
উল্লেখ্য, বিধানসভা ভিত্তিক সেবাশ্রয়ের শিবির পরিদর্শন করে তার কার্য তদারকি করেছিলেন অভিষেক। শেষ পাঁচদিনের মেগা ক্যাম্পের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। পরিদর্শন শেষে অভিষেকের গভীর উপলব্ধি, ‘যাত্রা হয়তো তার শেষ পর্যায়ে পৌঁছতে চলেছে, তবে প্রতিটি সমাপ্তি একটি নতুন শুরুর পথ তৈরি করে।’ অর্থাৎ সেবাশ্রয় শেষ হলেও যে তা ফের নতুন রূপে ফিরে আসতেই পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন সাংসদ। তাঁর সংযোজন, ‘সেবাশ্রয় শুধু বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেনি বরং মানুষকে প্রকৃত অর্থে সেবা করার গভীর উপলব্ধিও প্রদান করেছে। এই অভিজ্ঞতা, অনুভূতি এবং শিক্ষা আমার কর্তব্যবোধকে আরও দৃঢ় করেছে। প্রকৃত সেবা আন্তরিকতা ও সহানুভূতির মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়। আর মানবকল্যাণের প্রতি এই অবিরাম নিষ্ঠাই আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলায় পথপ্রদর্শক ও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
সুতরাং, সেবাশ্রয় কেবল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সৃষ্টি নয়, তাঁর শিক্ষাগুরুও বটে। এখানেই কি চিরতরে শেষ সেবাশ্রয়ের পথচলা? এ প্রসঙ্গে পূর্বেই ইঙ্গিত দিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ‘আমার ইচ্ছে আগামীতে ব্লক স্তরে সেবাশ্রয়ের আয়োজন করব। মানুষ নিজের দুয়ারে পাবেন স্বাস্থ্যসেবা। বড়ো স্বপ্ন দেখতে হয়, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই লড়তে হয়।’ সেবাশ্রয়ের সফল বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন অভিষেকের সহকর্মী সুমিত রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর খান, সাতগাছিয়া বিধানসভার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর ভার্তেন্দু শর্মা, দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশিষ্ট চিকিৎসক অভীক ঘোষ, ডাঃ অসীত চক্রবর্তী, ডাঃ সুমিত সাহা প্রমুখ।