• facebook
  • twitter
Sunday, 5 January, 2025

অভিষেকের অভিনব উদ্যোগে ৭৫ দিনে ৩০০টি স্বাস্থ্যশিবির

রাজ্য সরকার বিগত চোদ্দো বছরে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে উন্নয়ন এনেছে তাতে প্রত্যেক ব্লকেই একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। আমি বুথ-স্তরে পৌঁছনোর ক্ষুদ্র প্রয়াস করেছি।

নিজস্ব চিত্র

ডায়মন্ড হারবারে পথচলা শুরু করল সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত স্বাস্থ্য-প্রকল্প ‘সেবাশ্রয়’। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারের এসডিও মাঠে আয়োজিত সেবাশ্রয়ের ‘মডেল ক্যাম্প’-এ উপস্থিত হয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে এই প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেন অভিষেক খোদ। ৭৫ দিন ব্যাপি আয়োজিত এই শিবির শুরু হল ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই। এদিন সাংসদ নিজে ওই শিবির সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। কেন সেবাশ্রয়? অভিষেকের ভাষায়, ‘আমরা শুধু ভোটের রাজনীতি করি না। আমি জনসাধারণের ভালোবাসার ঋণ পরিশোধে দায়বদ্ধ।

রাজ্য সরকার বিগত চোদ্দো বছরে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে উন্নয়ন এনেছে তাতে প্রত্যেক ব্লকেই একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। আমি বুথ-স্তরে পৌঁছনোর ক্ষুদ্র প্রয়াস করেছি। ভারতবর্ষের কোথাও আজ পর্যন্ত এই ধরণের প্রকল্প কেউ করেনি।’ তাঁর এই বিনামূল্যের স্বাস্থ্যশিবির রাজ্যের স্বাস্থ্যখাতে কী নয়া দিশা দেখাবে? এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘প্রত্যেক প্রচেষ্টাই একটা নিদর্শন। আয়ুষ্মান ভারত অনেক পরে এসেছে, স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে পথ দেখিয়েছে বাংলা-ই। বাংলা সহ সমগ্র দেশকে পথ দেখাবে সেবাশ্রয়।’ তাঁর বার্তা, ‘এই লোকসভার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকেও যদি কোনো মানুষ এখানে আসেন, কাউকে ফেরাবেন না। রাজনৈতিক রং নির্বিশেষে এই আয়োজন সবার। সকল জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে আসুন এই ঐতিহাসিক কর্মযজ্ঞ সাধনে, আমি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবো।’

সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেবাশ্রয়ের পরিকাঠামো প্রসঙ্গে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে অভিষেক জানিয়েছেন, ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা অর্থাৎ ৭১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে আগামী ৭৫ দিনে ৩০০টি শিবির আয়োজিত হবে। ডায়মন্ড হারবার বিধানসভায় আয়োজিত ৪০টি শিবিরের মধ্যে একটি মডেল শিবির। এইরূপ প্রত্যেক বিধানসভায় একটি মডেল শিবির থাকবে। সাধারণ ক্যাম্পে একটি রেজিস্ট্রেশন ডেস্ক ও হেল্প ডেস্ক রয়েছে। সাধারণ ক্যাম্পে দু’জন চিকিৎসকদের জন্য পৃথক চেম্বার, বিশ্রামকক্ষ এবং রোগীদের প্রতীক্ষালয়, চিকিৎসার জন্য পৃথক স্থান, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের জন্য ফার্মেসির বন্দোবস্ত রয়েছে।

তবে, মডেল ক্যাম্পে তিনটি ডাক্তারদের চেম্বার রয়েছে। তাছাড়াও মডেল ক্যাম্পে থাকবেন ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, তিনজন এমবিবিএস ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রমুখ। ২-১১ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবারে ৪১টি, ফলতায় ১২-২১ জানুয়ারি ৪০টি, বিষ্ণুপুরে ২২-৩১ জানুয়ারি ৪৭টি, মেটিয়াবুরুজে ১-১১ ফেব্রুয়ারী ৩৬টি, সাতগাছিয়ায় ১২-২১ ফেব্রুয়ারী ৪৫টি, বজবজে ২২-৩ মার্চ ৪২টি এবং মহেশতলায় ৪-১৩ মার্চ ৪৫টি শিবির আয়োজিত হবে। প্রত্যেক বিধানসভায় দশদিনের ক্যাম্প শেষে ১৬-২০ মার্চ ফলো-আপ পরিষেবার জন্য ৩০০টি মেগা ক্যাম্প আয়োজিত হবে গোটা লোকসভায়।

উল্লেখ্য, সেবাশ্রয়ে রোগীর রেজিস্ট্রেশনের পর তাঁকে ইউনিক টোকেন এবং সচেতনতামূলক পুস্তিকা দেওয়া হবে। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ত্রিপল সেরোলজি, রক্তচাপ সহ বিভিন্ন টেস্ট বিনামূল্যেই করানো হবে শিবিরে। হুইল চেয়ার, স্ট্রেচার, ডিজিটাল থার্মোমিটার এবং মডেল ক্যাম্পে ক্রিটিক্যাল বেড, ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, কার্ডিয়ক মনিটর, ক্যান্সার স্ক্রিনিং, গুরুতর রোগীদের জন্য পৃথক কক্ষ সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে শিবিরেই। এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিষেকের সহকর্মী সুমিত রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর খান, সাতগাছিয়া বিধানসভার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা, বজবজের বিধায়ক অশোক দেব, দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশিষ্ট চিকিৎসক অভীক ঘোষ, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর ভার্তেন্দু শর্মা-সহ প্রমুখ।