উপনির্বাচন পর্ব মিটে যাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসে বড়সড় রদবদলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে। যতদূর জানা গিয়েছে, ১০ জন জেলা সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এছাড়াও একাধিক পদে রদবদলের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যের শাসক দলের সংগঠনে গতি আনতে এই উদ্যোগ বলে জানা যাচ্ছে। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পুরসভা ভোটে কাউন্সিলরের টিকিট পেয়ে আপনি জয়ী হবেন, আর লোকসভা ভোটে দল আশানুরূপ ফল করতে পারবে না, এটা চলবে না। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। তিনি যতবড় নেতার ছায়ায় থাকুন না কেন?
ইতিমধ্যে তিন মাস কেটে গিয়েছে। যদিও সেদিন অভিষেক পুরসভা এবং জেলা সংগঠনের রদবদলের কথা বলেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অস্ত্রোপচারের জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন। দেশের বাইরে যাওয়ার আগেই কোথায় কোথায় কাকে বদল করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তৃণমূল সুপ্রিমোকে তিনি দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু উপনির্বাচনের কারণে হয়তো সেই রদবদল সম্ভব হয়নি, এমনটাই জানিয়েছেন অভিষেক। আনুগত্য কোনও বিষয় নয়, পারফরম্যান্সই শেষ কথা, এমনটাই বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বেশ কয়েকটি জেলার জেলা সভাপতি দীর্ঘদিন ধরে পদে রয়েছেন। নতুনদের আরও বেশি করে দলের দায়িত্বে আনতে চায় তৃণমূল, এমনটাই জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে সংগঠনে নবীন ও প্রবীণের ভারসাম্য রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তৃণমূল সুপ্রিমো।
৬টি বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে, প্রত্যয়ী তৃণমূল। কিন্তু ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই ঘর গোছাতে চায় রাজ্যের শাসক দল। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পুরসভার পুরপ্রধানদের একাংশের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন রাজ্যের শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। স্বাভাবিকভাবে এক্ষেত্রেও কী ধরনের পরিবর্তন আসে, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে দলের মধ্যে। তবে, এক ধাক্কায় অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে না দিয়ে ধাপে ধাপে সেইসব নেতানেত্রীদের গুরুত্ব কমানো হয় কিনা, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। পারফরম্যান্স না করলে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা যাবে না, এমনটাই মনে করেন অভিষেক। সেক্ষেত্রে পকেটের লোক দিয়ে নয়, পারফরম্যান্সকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে নিজেই উদ্যোগী হয়ে তৃণমূল স্তর থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। সেই রিপোর্ট চুলচেরা বিশ্লেষণ করার পর তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে। এখন এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন, তার দিকে তাকিয়ে সবপক্ষ।