রাজ্যের ‘অসংগতি দূরীকরণ’-এ তৎপর অভিষেক

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।

আরজি কর কাণ্ডকে হাতিয়ার করে রাজ্যে শাসক-বিরোধী সুর চড়িয়েছে পদ্মশিবির থেকে অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। জনসাধারণের প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য থেকে পুলিশি ব্যবস্থা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রের ‘মেরামতি’তে স্বমহিমায় মাঠে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। পাশাপাশি এই কার্যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৎপর হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আরজি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্য প্রতিবাদে উত্তাল হলেও মাঠে ময়দানে বিশেষ দেখা যায়নি অভিষেককে। তবে সমাজমাধ্যমে তিনি বার বার মুখ খুলেছেন। কখনও ধর্ষণ-বিরোধী কঠোর কেন্দ্রীয় আইন বলবৎ করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন আবার কখনও দোষীদের দ্রুত শাস্তি প্রদানের দাবিতে সরব হয়েছেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের একটানা আন্দোলনকেও ‘বৈধ, বিচক্ষণ, ন্যায়সঙ্গত’-এর তকমা দিয়ে তাঁদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার দাবিতে সহমত পোষণ করেছিলেন অভিষেক। তবে এরপরেও দলীয় আলোচনায় উঠে এসেছিল অভিষেক-প্রসঙ্গ। দলের সামনের সারির নেতা থেকে কর্মী-সমর্থকগণ চেয়েছিলেন অভিষেক সামনে থেকেই লড়াই করুক। তবে এক্ষেত্রে দূরদৃষ্টি রেখেছিলেন তৃণমূল সেনাপতি।

উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দোপাধ্যায় যে নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নেননি তার স্পষ্ট প্রমাণ হলো, বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নের সভাঘরে আয়োজিত স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকগণ। সূত্রের খবর, অভিষেক তাঁদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দাবিতে ‘প্রকাশ্য সম্মতি’ জানিয়ে বলেছিলেন, আরজি কর কাণ্ডের পর রাজ্য জুড়ে যে অসংগতি তৈরী হয়েছে তার দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। আর সেই অসংগতি-দূরীকরণের কাজ করতে হবে চলতি মাসেই। এরপর চলতি সপ্তাহেই নবান্ন-বৈঠকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে প্রথম আলোকপাত করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আরজি কর-কাণ্ডের পর একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করেছে রাজ‍্য সরকার। এর মধ্যে রয়েছে হাসপাতালে নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দকরণ। নবান্ন সূত্রে খবর, হাসপাতালের সুরক্ষা পরিকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ অর্থের সঠিক ব্যবহার সংক্রান্ত আলোচনাই হবে এই বৈঠকে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য জুড়ে জেলাশাসকদের আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়ে দ্রুত গৃহহীন মানুষদের বাসস্থানকেও সুনিশ্চিত করতে চাইছেন। এক কথায়, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে একটা বড় অঙ্ক কষা শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল। প্রশাসক হিসাবে এর বাস্তবায়নের নেপথ্যে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকছেন। কিন্তু রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে অভিষেকের ভূমিকাও এ বিষয়ে কম নয়।