ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখর হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে অশোক স্তম্ভে সিংহের ‘বিকৃতি’ নিয়ে সরব হলেন তৃণমুল কংগ্রেসের এই প্রভাবশালী নেতা।
অভিষেকের কথায় ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি জরুরি অবস্থার চেয়েও খারাপ নাম, প্রতীক সব বদলে দেওয়া হচ্ছে। দেশের মানুষ খেতে পারছে না দেশ জরুরি অবস্থার চেয়েও খারাপ অবস্থার দিকে রয়েছে।
জাতীয় প্রতীকের উদ্বোধন করতে রাষ্ট্রপতিকে ডাকা হল না বিরোধীদের কথা নাই বা বললাম। আসলে বিজেপির কালচার এটা। রাষ্ট্রপতি পদে একজনকে বসায় কিন্তু তাঁকে যোগ্য সম্মান দেয় না।
এখানেই থেমে থাকেননি অভিষেক, এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন তপসিলি জাতি উপজাতির প্রতিনিধিকে রাষ্ট্রপতি করলাম, কিন্তু যোগ্য সম্মান দিলাম না এরই নাম বিজেপি।’
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব হন।
২১ জুলাই নিয়ে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বুধবার খুঁটিপুজো হওয়ার পর প্রস্তুতিক কর্মক্ষমতা যেন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।
২১ জুলাইয়ের শহিদ স্মরণে যোগ দিতে দূরের জেলাগুলি থেকে এক বা দু’দিন আগে থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীরা চলে আসেন। তাঁদের খাওয়া, থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে।
সেই ব্যবস্থা দেখতে বৃহস্পতিবার সেখানে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি জায়গা ঘুরে দেখেন তিনি এবং দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে সেখানে একদফা বৈঠকও সারেন।
করোনার কারণে বিগত দু’টি বছর ২১ শে জুলাইয়ের সভা সেভাবে হয়নি। সভা হয়েছে ভার্চুয়ালি।
তাই এবছর ২১ জুলাইয়ের সভায় বেশি সংখ্যক মানুষকে নিয়ে আসতে জোরকদমে প্রস্তুতি চালাচ্ছে তৃণমূল নেতা থেকে কর্মীরা।
কোন এলাকা থেকে ক’টি বাস বা গাড়ি আসবে, সেখানে কত মানুষ আসবে তার হিসেবনিকেশ তৈরি করা হচ্ছে।
সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক পরিদর্শনের পর অভিষেক জানান করোনাবিধি মেনেই সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দু’বছর পর ফের ২১শে জুলাই হচ্ছে। মানুষের উদ্দীপনা বেশি।
তবে উপস্থিত সকলকে মাস্ক, স্যানিটাইজার বিলি করা হবে খাবারের জায়গায় সিসিটিভি লাগানো হয়েছে, যাতে দূরত্ববিধি বজায় থাকছে কিনা, তার দিকে নজর রাখা যায়। নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তির মতো দেশ চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ঠিক এইভাবে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্কে একুশে জুলাই সমাবেশ উপলক্ষে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন তিনি।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, উপ মেয়র অনিতা মন্ডল, চেয়ারপার্সন সব্যসাচী দত্ত সহ অন্যান্যরা।
আর সেখান থেকেই একের পর এক বিষয়ে বিজেপি সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে তোপ দাগেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নতুন সংসদ ভবনে নব নির্মিত অশোকস্তম্ভ নিয়ে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তির মত দেশ চালানো হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি পদের প্রতি সম্মান দেখানো হয় না প্রধানমন্ত্রী কেন অশোকস্তম্ভের উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি নয় কেন?
এছাড়াও সংসদে অসংসদীয় ভাষা বন্ধ নিয়ে অভিষেকের যুক্তি, স্বৈরতান্ত্রিক, একনায়কতন্ত্র, দাম্ভিকতার পরিচয় কেন্দ্রের। কেন্দ্র ঠিক করে দেবে আমরা কী খাব, কীভাবে পুজো করব, কী বলব?
ব্রিটিশ শাসনেও মানুষ এতটা পরাধীন ছিল না। বিরোধীদের কাজ প্রতিবাদ জানানো। সাংসদ কী বলবে তা ঠিক করবে সংসদ? একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক।