নিজস্ব প্রতিনিধি– উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের পর এবার অশোকনগর। ছেলেধরা সন্দেহে এক ভবঘুরে মহিলাকে গণপিটুনির ঘটনায় অশোকনগরে ইতিমধ্যেই মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, একবারে নয়, বরং ধাপে ধাপে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের। শুক্রবারের রাতে পাঁচ অভিযুক্তকে এবং শনিতে আরও দশ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে রয়েছেন তিনজন মহিলাও। বাচ্চা চুরির গুজব রটানো, গণপিটুনি সহ বিশৃংখলা সৃষ্টি করার অভিযোগে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে। শনিবার ধৃতদের বারাসত আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে ঠিক কি ঘটেছিল অশোকনগরে? পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ অশোকনগরের ভুরকুন্ডা পঞ্চায়েতের পুমিলা বাজার এলাকায় বছর ২৪ এর রজনী খাতুন নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাঁকে দেখেই ছেলেধরা সন্দেহে তাঁর উপর চড়াও হন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে পরিস্থিতিতে উত্তাল হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনরোষের হাত থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রজনী খাতুন নামক ওই তরুণীর বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ডহারবার এলাকায়। ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে একের পর এক অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার অশোকনগর শহরে গুজব রুখতে এবার বারাসতের পর অশোকনগরেও সচেতনতার প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, বাচ্চা চুরির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তবুও সোশ্যাল মিডিয়ার গুজবে কান দিয়ে মানুষ স্রেফ সন্দেহের বশে আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকার মানুষকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে, গুজবে কান না দিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন। কোথাও সন্দেহ হলে পুলিশকে জানান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বারাসতের কাজীপাড়ায় কিশোর খুনের পর বাচ্চা চুরির রটনা রটছে বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম, দত্তপুকুর সহ অশোকনগরেও। সম্প্রতি এই বিষয়ে বারাসত পুলিশ কে তৎপর হতে দেখা গিয়েছে। মাইকিং থেকে অভিভাবকদের সাথে সরাসরি কথা বলা, সবই করা হয়েছে বারাসত পুলিশের তরফ থেকে। এবার একই পথে হাঁটলো অশোকনগর থানার পুলিশ।