জলমগ্ন রাস্তায় অসুস্থ প্রসূতিকে টিউবে করে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে

প্রচণ্ড বৃষ্টির দাপটকে উপেক্ষা করে এক রোগীনিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল টিউবে করে। মাত্র দশ দিন আগেই সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ওই তরুণী। সিজার হওয়ার পর দশদিনের মধ্যেই ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু রাস্তা তখন নদীর রূপ নিয়েছে। কোনও উপায় না দেখে বাতিল হওয়া টিউবে করেই রোগিণীকে নিয়ে পার হতে হয় জলমগ্ন রাস্তা। সব বাধা পেরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। যদিও শেষ পর্যন্ত ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি। হাসপাতাল থেকেই তাঁকে আত্মীয় পরিজন বাড়িতে নিয়ে যান। দানার দাপট চলে গেলেও জল-যন্ত্রণার এমন ছবিই দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের ৫/১ অঞ্চলের বাড়াগড় এলাকায়। 
শনিবার কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় লক্ষ্মী নায়েক ও তাঁর পরিবারকে। দশ দিন আগেই সিজার হয়েছে লক্ষ্মীর। একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এরপর হাসপাতাল থেকে বাড়িও ফিরে আসেন। কিন্তু শনিবার আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হওয়ায় আবার খোঁজ পড়ে টিউবের। অসুস্থ মহিলাকে বাতিল হওয়া টিউবে বসিয়েই  জলমগ্ন রাস্তা পার হতে হয়। 
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এলাকায় যে খাল রয়েছে তা ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংস্কার হয়নি। সংস্কার হয়নি রাস্তারও। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে জলবন্দি হয়ে পড়েন এলাকার মানুষ। দানার হাত ধরে যে মুষলধারে বৃষ্টি গত কয়েকদিন ধরে প্রত্যক্ষ করেছেন এলাকার মানুষ তাতে জলের তীব্রতায় ভেঙেছে সব বাঁধ। রাতারাতি ভেসে গেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা। অসুস্থ তরুণী তথা সদ্য হওয়া মায়ের পরিবার তো বটেই, গ্রামবাসীদেরও দাবি, প্রতি  বছরই বর্ষায় এমন গুরুতর পরিস্থিতিতে কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে টিউবই তাঁদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু  নির্বিকার প্রশাসন ।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও।  বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “বাংলায় এমন অনেক জায়গা আছে  যেখানে স্বাধীনতার পর থেকে বিশেষ উন্নয়ন হয়নি। সরকার বদলায় কিন্তু ওইসব  জায়গার পরিস্থিতি বদলায় না। শুধু পারস্পরিক দোষারোপ চলে। কাজের কাজ করে না কেউ।”
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, দ্রুত নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান পূর্ণিমা ভুঁইয়ার দাবি, চলতি মরসুমেই সংস্কারের  পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। তিনি জানান, ‘‘দ্রুত নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে।’’ কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন কবে হবে তার কোনও সদুত্তর নেই কারও কাছে।গ্রামবাসীর দাবি,  এবার উদ্যোগী হয়ে খালের সংস্কারের কাজে হাত দিক প্রশাসন।