সাইবার প্রতারণা চক্রের বড় মাথাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ সইদুল। সোমবার রাতে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ প্রচুর কাগজপত্র, ব্যাঙ্কের পাশবই, এটিএম কার্ড। যা দেখে হতবাক পুলিশ কর্মীরা। জানা গিয়েছে, অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া করে চলত অবৈধ অর্থের লেনদেন। এভাবে দেশজুড়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিল সে। কয়েক হাজার ‘ভুয়ো’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও সে তৈরি করেছিল বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের কাছে ধৃত সইদুল স্বীকার করেছে, গত দেড় বছরে প্রায় হাজার খানেক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তবে পুলিশের অনুমান, এই ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা হাজার নয়, কমপক্ষে হাজার দুয়েক অ্যাকাউন্ট তার মাধ্যমে খোলা হয়েছিল। ধৃতকে এদিন আদালতে তোলা হলে তাকে ছয়দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তাকে জেরা করে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
পুলিশের অনুমান, মহম্মদ সইদুল গত বেশ কয়েক বছর ধরে প্রায় ৮০ কোটি টাকার বেশি প্রতারণা করেছে। শুধু তাই নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দুবাইতে এই প্রতারণার টাকা পাচার হয়ে যেত। গুজরাট, দিল্লি, মুম্বই থেকেও প্রতারণা চলে। সেই কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই চক্রের বিরুদ্ধে ৩৪০টি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফাঁসিদেওয়া থানাতেও জালিয়াতির ৮টি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রায় দেড় বছর ধরে এই চক্র প্রতারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, এই সাইবার প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেজন্য দীর্ঘদিন ধরে এই সাইবার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল। ফাঁসিদেওয়া থানার তরফে ঘটনার তদন্তে একটি সিট গঠন করা হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে অনুমান করে, এই প্রতারণা চক্রের কিং পিন মহম্মদ সইদুল। সেইমতো তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। কিন্তু গত প্রায় নয় মাস ধরে পুলিশের নজর এড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার ফাঁসিদেওয়ার একটি বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে চাঞ্চল্যকর প্রচুর নথি উদ্ধার হয়।
তাকে গ্রেপ্তারের সময় ওই বাড়ি থেকে ৪১৪টি এটিএম কার্ড, ২৩৫টি চেকবুক ও ১৪৮টি পাশবুক উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে একাধিক প্যানকার্ড, বিভিন্ন কিউআর কোডও মিলেছে সেখানে।